কলকাতা: সম্ভাবনা ছিলই৷ এদিন সেই সম্ভাবনাতেই সিলমোহর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে সিলেবাস কমানোর কথা ঘোষণা করলেন তিনি৷ এবিষয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে৷ ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের উচ্চমাধ্যমিকে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ সিলেবাস কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর৷ এছাড়াও ২০২০ সালে উচ্চমাধ্যমিকে বিভিন্ন বিষয়ে যে প্রশ্নগুলি এসে গিয়েছে, ২০২১ সালে ওই বিষয়গুলি পুরোপুরি বাদ দেওয়া হবে৷
আরও পড়ুন- মাতৃভাষায় ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ! উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্র
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, যে থিওরি পেপারগুলিতে ৬০ বা ৬০ এর কম নম্বর রয়েছে, সেই বিষয়গুলির সিলেবাস কমানো হবে না৷ গুজরাতি, তেলেগু, নেপালি বি এবং নৃতত্ত্ব বিষয়ে সিলেবাস কতটা কমানো হয়েছে তা শীঘ্রই জানানে হবে৷ বাকি বিষয়গুলির নয়া সিলেবাস প্রকাশ করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ৷ বিষয়ভিত্তিক বাতিল তালিকায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে৷ রসায়নের তালিকা দীর্ঘ৷ রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আন্তর্জাতিক রাজনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাতিল করা হয়েছে৷ সাংবাদিকতা বিভাগে খবর লেখার বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে৷ এছাড়াও এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার জন্য পড়ুয়াদের টেস্ট পরীক্ষা দিতে হবে না বলেও জানানো হয়েছে৷ প্রত্যেকে সরাসরি পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে৷ উচ্চমাধ্যমিকে সরবরাহ যোগ্য ক্যাম্প শুরু হবে ৫ জানুয়ারি থেকে৷ সব ধরনের এনরোলমেন্ট ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২২ জানুয়ারি এবং ২৯ জানুয়ারি৷
আরও পড়ুন- CBSE 2021: বদলাচ্ছে প্রশ্নপত্রের ধাঁচ, নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে পারে শীঘ্রই
এর আগে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সিলেবাস কমিয়েছিল কেন্দ্রীয় বোর্ড৷ এবার কেন্দ্রীয় বোর্ডের দেখানো পথে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত সিলেবাসের কাটছাঁট করার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ পরীক্ষার দিনক্ষণ অপরিবর্তিত রাখা হবে কি না, বা পিছিয়ে যাবে কি না, এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি৷ সূত্রের খবর, করোনা ও ভোটের কারণে পিছিয়ে যেতে পারে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা৷ মার্চের বদলে এবার জুন মাসে পরীক্ষা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ অন্যদিকে কলেজে স্নাতকস্তরের শিক্ষাবর্ষ এবার কমিয়ে আনা হয়েছে৷ নভেম্বর থেকে পরের বছর আগস্ট পর্যন্ত নতুন শিক্ষাবর্ষ ঘোষণা করেছে ইউজিসি৷ ফলে, ওই বাড়তি কিছুটা সময় উচ্চমাধ্যমের জন্য বরাদ্দ হলে পড়ুয়ারা লাভবান হবেন বলে মনে করা হচ্ছে৷
এবিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয়ের কিছু অংশ বাদ দিতে হয়েছে একথা যেমন ঠিক, কিন্তু মনে রাখতে হবে এমন কোনও অধ্যায় বাদ দেওয়া ঠিক নয়, যেটা জানা না থাকলে ছাত্র-ছাত্রীদের মৌলিক জ্ঞানের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷ এর ফলে তাঁদের জ্ঞানের গভীরতা কমবে, যা কখনও কাম্য নয়৷ এই দিকগুলি কাউন্সিলের মাথায় রাখা দরকার৷’’