কলকাতা: প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনও মাধ্যমিকের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ। এদিন দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা শুরু হতেই ফের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্রের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলায় ছড়িয়েছে প্রশ্নপত্রটি। বিষয়টি নিয়ে এখনও কিছু জানায়নি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ৷ হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পর্ষদের দেওয়া প্রশ্নের মিল আছে কি না, তা এখনই বলা সম্ভব নয়৷ কারণ, পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা প্রকাশ করা অনৈতিক৷ অনদিকে, হুগলির পোলবায় দিল্লি রোডের উপর দুর্ঘটনার কবলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের গাড়ি। ঘটনায় তিন পরীক্ষার্থী জখম হয়েছে। আহতদের চুঁচুড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷
গতকাল এবছরের মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষার প্রথম দিনই বিভিন্ন জেলায় হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে যায়। ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য বিধাননগর কমিশনারেটের সাইবার থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীও রিপোর্ট তলব করেছেন পর্ষদের কাছে। তবে, শিক্ষা দপ্তরের তরফে রিপোর্ট চাওয়া হলেও নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা হয়েছে বলে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান পর্ষদের সভাপতি৷ প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে তিনি জানান, ‘‘আমাদের কাছেও একটি ম্যাসেজ আসে৷ তারপরই আমরা বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থাকায় অভিযোগ করি৷’’
মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুতে বেশ কয়েকটি জেলা থেকে প্রশ্ন ফাঁসের খবর ছড়িয়ে পড়ে৷ মালদহ, নদীয়া, কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে সোশাল মিডিয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের খবর বিদ্যুতের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে হাতেহাতে৷ উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন অভিভাবকদের মধ্যে৷ কোথায় কোথায় পরীক্ষা বাতিলের দাবিও উঠতে থাকে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া প্রশ্ন সঠিক কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে৷ তবে, অনেকেই বলছেন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে এর মিল রয়েছে৷ যদিও, প্রশ্ন-ফাঁসের মতো বিপত্তি এড়াতে এবার কড়া পদক্ষেপ নেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ৷ পরীক্ষার্থী ছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন কারও হাতে প্রশ্ন থাকবে না। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে সেকথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।
তাঁর মতে, প্রশ্নের প্যাকেট পরীক্ষাকেন্দ্রে আসার পর একেবারে পরীক্ষার হলেই খোলা হবে। কোন ঘরে কতজন পড়ুয়া আছে, সেই মতো প্রশ্নপত্রের প্যাকেট তৈরি করা হয়েছে৷ মোবাইল ব্যবহার নিয়েও বেশ কড়া পর্ষদ৷ পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত পাঁচজন আধিকারিকই একমাত্র মোবাইল রাখতে পারবেন। তাঁরা হলেন, সেন্টার সেক্রেটারি, অফিসার-ইন-চার্জ, ভেন্যু-ইন-চার্জ, ভেন্যু সুপারভাইজর এবং অতিরিক্ত ভেনু সুপারভাইজর। পরীক্ষার দিনগুলিতে যাতে শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা মোবাইল স্কুলে না নিয়ে আসেন, তার আর্জি জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি। তবে কেউ তা আনলেও, ফোন বন্ধ করে প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দিয়ে দিতে হবে। তিনি সেগুলি লকারে রেখে তালা দিয়ে তার চাবি ভেন্যু-ইন-চার্জের কাছে দিয়ে দিতে হবে৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে এতকিছু পরও কেন লাগাতার দুই দিনে এই বিভ্রান্তি? পরীক্ষা শুরুর দু’দিনের মধ্যেই যদি এমন বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে পরীক্ষার্থীদের মনোবল ভেঙে পড়লে কে নেবে এই দায়? প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকদের একাংশ৷