কলকাতা: করোনা সংক্রমণের বিপদ বুঝে বন্ধ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ দীর্ঘ লকডাউনের পর আনলক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত বাংলায় খোলেনি স্কুল-কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা৷ আগের নির্দেশ অনুযায়ী আগামীকাল বুধবার রাজ্যে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ কিন্তু মেয়াদ ফুরিয়ে এলেও এখনও সরকারিভাবে কোনও ঘোষণা হয়নি৷ সরকারি ভাবে স্কুল আরও কত দিন বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়ার আগে আগামী ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷
করোনা আবহের ইতিমধ্যেই ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ স্কুল-কলেজ বন্ধ৷ থমকে পঠন-পাঠন৷ বিকল্প মাধ্যমে পড়াশোনা চললেও তা সর্বগ্রাহ্য হয়নি৷ একদিকে যেমন করোনা সংক্রমণ, অন্যদিকে সিলেবাসের চাপ, সব মিলিয়ে বেশ ভাবেচিন্তে পা বাড়াতে চলেছে শিক্ষা দফতর৷ আগামীকাল স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার মেয়াদ সরকারিভাবে শেষ হলেও তা আরও বাড়তে চলেছে৷ তবে পুজোর আগে যে স্কুল খুলছে না, তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ তবে, পুজোর পর স্কুল খুললেও থাকবে বেশ কিছু সতর্কতা৷
রাজ্যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিসেম্বর থেকে শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে চলেছে শিক্ষাবর্ষ৷ আগামীকাল স্কুল বন্ধ থাকার সময়সীমা শেষ হচ্ছে৷ প্রশ্ন উঠছে স্কুল-কলেজ খুলবে কবে? সরকারি ভাবে ঘোষণা হওয়ার আগে শিক্ষামন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, পুজোর আগে স্কুল কলেজ খুলছে না৷ করোনার মধ্যে স্কুল খোলার মত হঠকারী সিদ্ধান্ত এখনই নেওয়া হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ একই সঙ্গে স্কুল খোলার আগে গাইডলাইন প্রকাশ করা হবে৷ সেই গাইডলাইন ইতিমধ্যেই বিকাশ প্রস্তুত করছে৷ কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়ুয়ারা স্কুলে আসবে, কী কী করনীয় শিক্ষকদের৷ কীভাবে ক্লাস হবে, সেই বিষয়েও তৈরি হচ্ছে গাইডলাইন৷ তবে যেহেতু এটা পুজোর মাস, ফলে ছুটি ও উৎসবের কথা ভেবে এখনই স্কুল-কলেজ খুল কলেজ খুলছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেো জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ জানা গিয়েছে, আগামীকাল স্কুল বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে রাজ্য সরকার৷
স্কুল খোলা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর জানিয়েছেন, ‘‘শিশুদের স্কুলে টেনে এনে বিপদগ্রস্থ করার আগে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কী ধরনের স্বাস্থ্য বিধি এবং জীবাণুমুক্ত করা যায়, তা নিয়ে একটা রূপরেখা তৈরি হচ্ছে৷ সেই রূপরেখা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে৷ সেটা হলেই আমরা পরবর্তীতে জানিয়ে দেব৷ কীভাবে ক্লাস নেওয়া হবে, পরিকল্পনামাফিক আমরা জানিয়ে দেব৷ পুজোর মাস৷ সমস্ত দিকগুলি আলোচনা না করে হঠকারী সিদ্ধান্ত সরকার নেবে না৷ শিক্ষা দফতরও নেবে না৷’’ অর্থাৎ পুজোর আগে যে এক প্রকার স্কুল-কলেজ খুলছে না তা কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷
গত বুধবার বিকাশ ভবনে বৈঠক করেন শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা৷ ওই বৈঠকেই নভেম্বর মাসের শুরুতে স্কুল খোলার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে খবর৷ গত সপ্তাহের শুরুতে বিকাশ ভবনের বৈঠকে স্কুলগুলিতে স্যানিটাইজেশন প্রোটোকল নিয়েও আলোচনা হয়েছিল৷ স্কুল খোলার দুই সপ্তাহ আগে থেকে স্যানিটাইজেশনের কাজ করতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়৷ এর আগে দুর্গা পুজোর আগে স্কুল-কলেজ খোলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তবে কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনা করার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও উল্লখ করেছিলেন তিনি৷ বর্তমানে রাজ্যে ২৫ হাজারেরও বেশি সক্রিয় করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছে৷ ফলে দুর্গা পুজোর আগে স্কুল খোলার সম্ভবনা পুরোপুরি ক্ষীণ৷