সিদ্ধার্থ বোস: তাদের কারোর বাবা নেই, আবার কারোর মা অন্যের বাড়ি কাজ করেন। সামর্থ্য খুব বেশি নেই, দুবেলা পেট পুরে খাবারটুকু জোগাড় করতেই এদের কালঘাম ছুটে যায়। পড়াশোনার খরচ চালাতে অপারগ তাদের পরিবার। এই সমস্ত অসহায় পড়ুয়াদের স্বপ্নকে সত্যি করতে পাশে দাঁড়িয়েছে হাওড়ার আমতার এক সংস্থা ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’।
আর পাঁচটা পড়ুয়াদের মতোই সইদুল, কৃষ্ণেন্দু, দীপাংশু, আকাশ এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। পরিবারের সামর্থ্য না থাকলেও ওরা সকলেই খুব মেধাবী। ওদের কেউ মাধ্যমিকে পেয়েছে ৯০ শতাংশ কেউবা পেয়েছে ৭৫ শতাংশ নম্বর। কিন্তু বাকিদের থেকে ওদের জীবনের লড়াইটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওদের কারো কারো ঘরে এখনও আলো পৌঁছায়নি, আবার কারোর পরিবার সাফাইকর্মীর কাজ করে বলে সমাজে ওদের জায়গা পেতে খুবই কষ্ট করতে হয়। এই সমস্ত পরিবার তথা পড়ুয়ার পাশে একমাত্র সাথী হিসাবে এগিয়ে এসেছে 'স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ”।
সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা পৃথ্বীশরাজ কুন্তী বলেন, ” ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের প্রয়োজনীয় পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা সামগ্রির জন্য আবেদন জানিয়েছে। আমাদের সংস্থার কর্মীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই সমস্ত তথ্য যাচাই করে আসছে।” তিনি জানান, সেই সমস্ত তথ্যের ওপর নির্ভর করেই ওই পড়ুয়াদের বই, খাতা শিক্ষা সামগ্রি নিয়ে তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন সংস্থার কর্মীরা। এর পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত শিক্ষার আলোতে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছে এই সংস্থা, জানান পৃথ্বীশ। সংস্থার পক্ষ থেকে জানান হয়, হাওড়ার বিভিন্ন ব্লকে এবছর ১৮ জন পড়ুয়ার হাতে তাদের পড়াশোনার সামগ্রি তুলে দিয়েছে সংস্থা। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রাকেশ মণ্ডল। তিনি বলেন, ” অনেক পড়ুয়াই উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখে, কিন্তু অভাব অনটন সেই স্বপ্নকে সত্যি করতে বাঁধা দেয়। সেখানে স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ তাদের স্বপ্ন কে বাস্তবায়িত করছে। তাদের উদ্যোগ সত্যিই অনবদ্য।”