আমডাঙা: আছে ভোটার৷ প্রার্থীও অনেক৷ কেউ দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদে৷ কেউবা আবার শিক্ষামন্ত্রী পদপ্রার্থী৷ কড়া নিজরদারিতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা বেছে নিলেন প্রার্থীকে৷ ভোট দেওয়ার আগে যথারীতি আঙুলে দেয়া হল কালি৷ তারপর ব্যালটে নিজেদের মতামত জানিয়ে জমা পড়ল ভোট৷ শান্তিতেই মিটল নির্বাচন৷ ভোট মিটতেই প্রকাশিত হল ফলাফলা৷ তবে, কোনও গোলমাল ছাড়ায় নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী-সহ মন্ত্রীপরিষদ৷
না, এই নির্বাচনের সঙ্গে বাস্তবের আকাশ-পাতাল পার্থক্য বড়দের নির্বাচনক ব্যবস্থাকে কার্যত দশ গোল দিয়ে পথ দেখাল খুদে পড়ুয়ারা৷ আসলে, পড়ুয়াদের মধ্যে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের পাঠ নিতে স্কুলের মধ্যেই শিশু সংসদ নির্বাচনে নয়া নজির গড়ল উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা মরিচা জুনিয়র হাই স্কুল৷
এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমিত ভট্টাচর্য জানিয়েছেন, ‘‘গণতন্ত্র যেমন আমাদের স্বাধীনভাবে বাঁচতে শেখায়, ঠিক তেমনি স্বাধীনভাবে বাছতে শেখায়৷ যত সঠিকভাবে আমাদের মত সঠিকভাবে আমরা আমাদের প্রতিনিধি বাছতে পারব, তত সঠিক পথেই আমাদের দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব৷ যে সমাজ সঠিকভাবে বাছতে পারে না, সেই সমাজ সঠিকভাবে বাঁচতে পারে না৷ এই দর্শনের উপর ভিত্তি করেই আমরা বিদ্যালয়ে ‘শিশু সংসদ’ নির্বাচন ব্যবস্থা করি৷ এই নির্বাচন যতটা না শিশুদের ভোটার অধিকার, তার চেয়েও বেশি তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সঠিক প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার আনন্দ৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের দ্বারা মনোনীত শিশু সংসদ নির্বাচন উৎসবের আনন্দে সামিল হওয়া মূল উদ্দেশ্য৷’’
বলেন, ‘‘সেই সঙ্গে গণতন্ত্রে ছোটখাটো নিয়ম-পদ্ধতি সঙ্গে একেবারে হাতে-কলমে পরিচয় হয়ে যাওয়া, নেতৃত্ব দেওয়া, স্বাধীনতা ভাবে এক বিরাট কার্যে অংশ নেওয়া এই নির্বাচনের উদ্দেশ্য৷ যে কুশলী দক্ষতায় শিশুরা মনোনয়ন জমা দেওয়ার থেকে গোটা ভোট পর্বে অন্তত শান্তিতে এই নির্বাচন সম্পন্ন করেছে, তাতে আগামী দিনে এরা আমাদের নিশ্চয়ই পথ দেখাবে৷ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে নতুন প্রতিনিধি বেছে নেওয়া এই সুযোগ আসলে আরও মজবুত করতে পারবে বলে মনে করি৷ নবনির্বাচিত সংসদকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস জানিয়ে স্কুলের উন্নয়নের কাজে আরও বেশি করে এগিয়ে আসার আহবান জানাই৷’’