কলকাতা: ধেয়ে আসছে ফনি৷ আর তার জেরেই গরমের ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত শিক্ষা দপ্তরের৷ আজ কিছুক্ষণের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে৷ আগামীকাল শুক্রবার থেকে গরমের ছুটি পড়ে যাচ্ছে৷ মূলত, গমর থেকে রেহাই পেতে ও ফনির প্রভাব এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে৷
ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার সমস্ত স্কুল বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে৷ আজ, কলকাতা পুরসভায় জরুরি বৈঠক করে শিক্ষা দপ্তরকে স্কুল বন্ধ রাখার আর্জি জানান মেয়র ফিরহাদ হামিক৷ আজ, সকালে ফনির পূর্বাভাস দেখে বৈঠকে বসে স্কুল শিক্ষা দপ্তর৷ সেখানে সব দিক মাথায় রেখে গরমের ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ আগামী ৩০ মে পর্যন্ত ছুটি দেওয়ার ঘোষণা রাজ্যের৷ অন্যদিকে, সিবিএসসি ও আইসিএসসি বোর্ডের স্কুলগুলিও ছুটি দেওয়ার আর্জি রাজ্যের৷
উপকূল লাগোয়া এলাকায় যেখানে ফণির জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে, সেখানে ছুটি দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার খাতিরে। আর যেখানে সতর্কতা নেই, সেখানে এই ছুটি বর্ধিত গরমের ছুটি হিসাবে ধরা হবে। অর্থাত্ সরকারি ও সরকার অনুমোদিত স্কুলে কাল থেকেই গরমের ছুটি শুরু হচ্ছে। প্রয়োজন পড়লে শেষের দিকে ছুটি মেয়াদ কমিয়ে দেওয়া হবে। এমনটাই জানা গিয়েছে নবান্ন সূত্রে।
এর আগে গরমের দাপটে গত মঙ্গলবার থেকে ১৯৪২টি প্রাথমিক স্কুলে বেলার পরিবর্তে সকালে শুরুর নির্দেশিকা জারি করে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। ১৭ মে পর্যন্ত বহাল থাকার কথা ছিল ওই নির্দেশিকা৷ তারপর গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতি যা তাতে ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ শিক্ষা দপ্তরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি হলেই আজ বিকেল ডট কমে বিস্তারিত প্রতিবেদন তুলে ধরা হবে৷
অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছে ওড়িশা উপকূলের দিকে৷ ৪২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ফনি৷ ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার করে এগচ্ছে এই অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়৷ বিশাখাপত্তনম থেকে ২৩০ কিমি দূরে রয়েছে ফনি৷ কলকতা থেকে ফনি এখন ৯০০ কিলোমিটারে দূরে অবস্থান করছে৷
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রের খবর, ওড়িশার ১৯টি জেলায় এর প্রভাব পড়তে পারে৷ প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশের তিনটি জেলায়৷ আর তার জেরেই পুরী, কেন্দ্রাপড়া, বালেশ্বর, ময়ূরভঞ্জ, গজপতি, কটক, জাজপুর-সহ ৮ লক্ষেরও বেশি মানুষকে ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ ৮৭৯টির বেশি সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলের মানুষদের ওই সাইক্লোন সেন্টারেই আপাতত রাখা হয়েছে৷
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার ‘ফনি’র প্রভাবে বাংলায় ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে৷ যার গতি ক্রমে বাড়তে থাকবে। শুক্র ও শনিবার তা ৮৫ কিলোমিটার থেকে ১১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বেগে প্রবাহিত হতে পারে। ওই দু’দিনে ৭০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে ‘ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স সেন্টার’ থেকে জানানো হয়েছে৷
ইতিমধ্যেই পুরীর সব হোটেল খালি করে দিয়েছে প্রশাসন৷ শুক্রবার থেকে সব বুকিং বাতিল করা হয়েছে৷ বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে পর্যটকদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ এমনকি, বেশ কিছু বাসেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে ওড়িশা প্রশানের তরফে৷