কলকাতা:রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চরম আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ এনে এবার দলমত নির্বিশেষে সংঘবদ্ধভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি পলিটেকনিক চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের যৌথ মঞ্চ। কর্মসূচী অনুসারে আগামী সোমবার থেকে বাম-তৃণমূল উভয়পক্ষের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা যৌথভাবে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। ফলে পঠন-পাঠন সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কাজকর্ম লাটে উঠতে চলেছে।
রাজ্যে এই মুহূর্তে ৭৮টি সরাকরি পলিটেকনিক কলেজের অধিকাংশই চলে চুক্তিতে নিয়োগ শিক্ষকদের ওপর। এইকলেজগুলিতে প্রায় ৪০হাজার পড়ুয়া আছে। ম আহ্বায়ক সৌমেন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, রাজ্যের ন’টি কলেজের পলিটেকনিক শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা গতবছর আগস্ট মাস থেকে কার্যত বেতন হীন পরিষেবা দিয়ে চলেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮সালে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ৯টি পলিটেকনিক কলেজ চালু হয়েছে। গত জুলাই মাসে এই কলেজগুলির অন্তত ৮০জন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর এক বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু চাকরির শর্ত অনুসারে তাদের রিনিউয়াল লেটার পাওয়ার কথা থাকলেও তার না পাওয়ায় তাদের বেতন বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে বাকি প্রায় ৪০টি কলেজের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জানুয়ারির রিনুয়াল লেটার এখনও হাতে আসেনি। তাই জানুয়ারি থেকে তাদেরও বেতন হয়নি।
ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর পাশাপাশি কলেজের অন্যান্য প্রশাসনিক কাজকর্মের দায়িত্বও পালন করতে হয় এই শিক্ষকদের। সুতরাং কার্যত বিনা বেতনেই এইসমস্ত কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কারিগরি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এবিষয়ে কথা বলতে চেয়েও সাড়া মেলেনি। নিরুপায় হয়ে এই বঞ্চনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মবিরতির শুরু করেছেন রঘুনাথপুর, হিলি, রানাঘাট, রাজগঞ্জসহ ৯টি পলিটেকনিক কলেজের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা । আগামী সোমবার অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যের সমস্ত সরকারি পলিটেকনিক কলেজে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি পলিটেকনিক চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের যৌথ মঞ্চ।
এদিকে বেতন কাঠামো পুনর্গঠন-সহ একাধিক দাবিতে পনেরো দিন অবস্থান কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বৃত্তিমূলক যৌথমঞ্চ। আদালতের অনুমতি নিয়ে বিগত ১৫ দিন ধরে কারিগরি ভবনের সামনে চলছে বৃত্তিমূলক শিক্ষকদের অবস্থান আন্দোলন। যদিও তাদের সমস্যা সমাধানে এযাবৎ কোনো সাড়া মেলেনি সরকারি তরফে।