মাছ বিক্রি করে পড়ার খরচ, তরুণীর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

চলে না সংসার৷ তবুও অভাবকে জয় করে এগিয়ে চলছেন বছর ১৯-এর তরুণী৷ সংসারের খবর থেকে কলেজে পড়ার খবর, সবাই নিজের উপার্যনে চালিয়ে যাচ্ছেন অভিনেত্রীর হওয়া স্বপ্ন দেখা ত্বন্বী৷ প্রতিদিন বাজারে মাছ বিক্রি করে কলেজের পথে যাতাযাত কেরলের পালারিভাট্টোমের ফুটফূটে ১৯ বছরের মেয়ে হানান হামিদার। কেরলের থোডুপুঝার আল আজহার কলেজ থেকে রসায়নে স্নাতক করছে সে। তার

মাছ বিক্রি করে পড়ার খরচ, তরুণীর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

চলে না সংসার৷ তবুও অভাবকে জয় করে এগিয়ে চলছেন বছর ১৯-এর তরুণী৷ সংসারের খবর থেকে কলেজে পড়ার খবর, সবাই নিজের উপার্যনে চালিয়ে যাচ্ছেন অভিনেত্রীর হওয়া স্বপ্ন দেখা ত্বন্বী৷ প্রতিদিন বাজারে মাছ বিক্রি করে কলেজের পথে যাতাযাত কেরলের পালারিভাট্টোমের ফুটফূটে ১৯ বছরের মেয়ে হানান হামিদার।

কেরলের থোডুপুঝার আল আজহার কলেজ থেকে রসায়নে স্নাতক করছে সে। তার জীবনে কষ্টের মধ্যেও খুশিও আছে অনেক। একার জোরে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর খুশি। যেকোনো ১৯ বছরের মেয়ের মতোই কিছু স্বপ্ন আছে হানানের। কোনো একদিন সিনেমায় অভিনয় করতে চায় হানান। তার জন্যে একটু একটু করে নিজেকে তৈরিও করেছে হানান। থিয়েটার করেছে, ছোট খাটো সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় ও করেছে। সেই সুবাদে কিছু নামী অভিনেতার সঙ্গে সেলফি তোলার সুযোগও হয়েছে তাঁর। ব্যাস ওই টুকুই। হানানের বাকী জীবন জুড়ে শুধুই ঘাম ঝরানো, দাঁতে দাঁত চেপে করা লড়াই।

মাছ বিক্রি করে পড়ার খরচ, তরুণীর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগহানানের বাবা হামিদ পেশায় ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রী, কিন্তু মদ্যপ। বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে সে। মা জাইরোবি একদিন বাবার হাতে বেদম মার খেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন, বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পান। ছোট ভাই স্কুলে পড়ে। ক্লাস সেভেনে পড়া অবস্থায় পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয় হানান। বেশ কিছু টিউশনি করে নিজের আর ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাড় হয়ে যায় তাঁর। কিন্তু মায়ের চিকিৎসা আর সংসার খরচ তুলতে মাছ বেচতে হয় তাঁকে।
রোজ ভোরে উঠে ঘন্টাখানেক পড়াশুনা করে হানান। তারপর সাইকেল করে দূরে এক পাইকারী মাছের বাজার থেকে মাছ কিনে এক আত্মীইয়ের বাড়ির ফ্রিজে জমা করে। তারপর সাইকেল চালিয়ে কলেজে যায় হানান। কলেজ থেকে ফিরে স্থানীয় পালারিভাট্টোম-থাম্মানাম বাজারে মাছ বিক্রি করে, সেই টাকায় চাল-ডাল, আনাজপাতি কিনে বাড়ি ফেরে।

কলেজ ড্রেস পরিহিত, মাঠায় উজ্জ্বল নীল টুপি পরা সুন্দর হাসিখুশি মেয়েটি মূর্তিময়ী ব্যাতিক্রম ওই মেছোহাটায়। হঠাতই একদিন কেরলের বহুল প্রচারিত কাগজ “মাতৃভূমি” র এক সাংবাদিকের চোখে পড়ে যায় এই অসম্ভব পরিশ্রমী মেয়েটি। অসাধারণ এই মেয়েটির কথা বের হয় কাগজে। একসকালেই কেরল জুড়ে বিখ্যাত হয়ে যায় হানান। অসংখ্য শুভেচ্ছা আসতে শুরু করে, আসে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও। তার স্বপ্নের কথা জেনে নিজের পরের সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেন কেরলের নবীন পরিচালক অরুণ গোপী। সোশ্যাল মিডিয়ায় হানানের ঘটনা ভাইরাল হবার পরেই সমালোচনাও আসতে থাকে ঝড়ের মতো। একদল বলতে শুরু করে গোটা টাই মাতৃভূমির বানানো ঘটনা। হানান নাকী মাত্র তিন দিন মাছওয়ালী সেজে বাজারে বসেছিল।

মৌলবাদীরা প্রশ্ন তোলেন, হানান মুসলিম হওয়া স্বত্ত্বেও হিজাব পরে নেই কেন। এদিকে হানান কে দেখতে প্রতি দিন এতো ভিড় হচ্ছিলো বাজারে, এতো যানজট হচ্ছিলো, যে স্থানীয় থানা তাকে কিছু দিন বাজারে না আসার নির্দেশ দেয়। ফলে প্রমাণ করা আরো সোজা হয়, যে সে প্রতিদিন বাজারে বসে না। এই বিরুদ্ধতার মুখে ভেঙ্গে পড়েছে ১৯ বছরের এই সাদাসিধে মেয়েটি। টিভি ক্যামেরার সামনে সজল চোখে বলেছে তাকে যারা অর্থ সাহায্য পাঠিয়েছিলেন, তাদের পাই-পয়সা মিটিয়ে দিতে সে রাজি। শুধু তাঁরা যেন হানান কে একা ছেড়ে দেন । ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় থেকেই একা লড়াই চালিয়ে এসেছে, বাকীটাও সে একাই করে নিতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × four =