কলকাতা: করোনার প্রভাবে বন্ধ স্কুল-কলেজ৷ থমকে পঠন-পাঠান৷ নির্দিষ্ট দু’টি বেসরকারি টিভি চ্যালেনের মাধ্যমে এক ঘণ্টা ক্লাস নেওয়া হচ্ছে বটে, তবে তারও রয়েছে সীমাবদ্ধতা৷ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় উদ্বোগ বাড়ছে বাংলার কয়ের কোটি পড়ুয়ার মনে৷ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলেও কবে ফলাফল প্রকাশিত হবে, তা চিন্তা বাড়ছিল বাংলার ১০ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৮৮ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে৷ এবার তাদের সেই চিন্তা দূর করে লকডাউনের মধ্যে মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের তোড়জোড় শুরু করে দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ৷
সাধারণ ক্ষেত্রে মে মাসের তৃতীয় কিংবা চতুর্থ সপ্তাহে বাংলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হত এতদিন৷ কিন্তু, করোনার দাপটে ওলটপালট করে দিয়েছে সমস্ত হিসাব৷ তবে, আশার কথা এটাই, করোনার তাণ্ডব শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা৷ খাতা দেখার কাজ শেষ৷ তবে, লকডাউনের জেরে নম্বর জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে৷ তবে, লকডাউনের গেরোয় থমকে থাকা প্রক্রিয়া ফের যাতে শুরু করা যায়, তা নিশ্চিত করতে মাঠে নামতে শুরু করেছে পর্ষদ৷
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে চার জেলায় মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে৷ দ্রুত ফল প্রকাশের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে কথাও জানানো হয়েছে বলে খবর৷ উত্তরের ৪ জেলার প্রধান পরীক্ষকদের কাছ থেকে নম্বর সংগ্রহের প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার কাজ শুরু করেছে পর্ষদ৷ ইতিমধ্যেই প্রায় ৬ লক্ষ নম্বর জমা পড়ে গিয়েছে বলে খবরে প্রকাশ৷
উত্তরের পাশাপাশি নজর রয়েছে দক্ষিণেও৷ সোমবার দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা থেকে নম্বর সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে৷ লকডাউনের জেরে এতদিন নম্বর জমা নেওয়ার কাজ বন্ধ ছিল৷ এবার লকডাউন পর্বের শেষের দিকে নম্বর সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছে পর্ষদ৷ প্রথম গ্রিন ও অরেঞ্জ জোন থেকে নম্বর সংগ্রের পর রেড জোন ও কনটেইনমেন্ট জোন থেকে নম্বর জমা নেওয়ার পর্ব শুরু হবে৷
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা৷ শেষ হয়েছিল ২৭ ফেব্রুয়ারি৷ ১০ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৮৮ জন পরীক্ষার্থী বলেন জীবনের প্রথম বোর্ড পরীক্ষায়৷ এই বছর ছাত্রীদের সংখ্যা ছিল সব থেকে বেশি৷ কবে প্রকাশিত হবে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল? গত ৮ এপ্রিল রাজ্য সরকারের উদ্যোগে চালু হওয়া ‘বাংলার শিক্ষা’ ভার্চুয়াল ক্লাসের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে জবাব দেন পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়৷ বলেছিলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে৷ আমাদের খাতা দেখা শেষ হয়ে গিয়েছে৷ নম্বর জমা পড়ার কাজ চলছিল৷ সেই অবস্থায় আমাদের লকডাউন শুরু হয়েছে৷ লকডাউনের কারণে পরীক্ষকরা সমস্যায় পড়েছেন গিয়েছেন৷ লকডাউন উঠলেই আমরা কিন্তু একেবারে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ফল বের করার চেষ্টা করব৷ আমাদের মিনিমাম কিছু সময় লাগবে৷ সেই সময়টুকু আমাদের দিতে হবে৷ আমি ছাত্র-ছাত্রীদের আশ্বস্ত করতে পারি, তারা নিশ্চিন্ত থাকুক, সব থেকে কম সময়ের মধ্যে, যে সময়টুকু আমরা ন্যূনতম পাব, সেই সময়ের মধ্যেই আমরা ফল প্রকাশ করব৷’’