কর্ণাটক: মাত্র একটা ঘটনা জীবনের আমূল পরিবর্তন করে দিল কর্ণাটকের ভুমিপুত্র প্রতাপের৷ দিন আনা কৃষক পরিবারের ছেলে প্রতাপ৷ পড়াশুনায় অত্যন্ত মেধাবী৷ কিন্তু পরিবারের আর্থিক সঙ্গতির যথেষ্ট অভাব রয়েছে৷ বাবাকে চাষের কাজে সাহায্য করার জন্য প্রতিদিন প্রায় মাঠে যেতে হয় প্রতাপকে৷ অদম্য জেদ আর কঠোর অধ্যাবসায় থামিয়ে রাখতে পারেনি এই কিশোরকে৷ ম্যানিব্যাগে যখন কানাকড়িও ছিল না, তখন সেই ব্যাগে ছিল দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডঃ এপিজে আবদুল কালামের ছবি৷ ফেলে দেওয়া পরিত্যক্ত ইলেক্ট্রনিক দ্রব্যাদি দিয়ে এই প্রতাপ বানালো রোবট ড্রোন৷
এই যন্ত্র বানানোর জন্যও আর্থিক অস্বচ্ছলতার অনেক দূর্গম পথ অতিক্রম করতে হয়েছে প্রতাপকে৷ অনেক সময় না খেয়েও সেই টাকা দিয়ে এই রোবট তৈরির যন্ত্র সামগ্রী কিনেছে সে৷ শেষে যখন ড্রোনের পরীক্ষামূলক উড়ান হয়, তখন পদে পদে বাধা আসে৷ কিন্তু শেষে জয়ের হাসি তাঁর মুখে দেখা গিয়েছে৷ ছোটো খাটো বাহবা জুটলেও বড় সড়ও কোনও স্বীকৃতি মেলেনি৷ অবশেষে জাপানের টোকিও তে অনুষ্ঠিত ২০১৭ এর আন্তর্জাতিক রোবোটিক এক্সিবেশনের সেরার খেতাব স্বরূপ স্বর্ণ পদক উঠে এল ২২ বছরের প্রতাপের ঝুলিতে৷
এরপর বিগত দু’বছরের মধ্যে বিশ্বের ৮৭টি দেশে নিজের তৈরি ৩০০ কিজে ওজনের এই ড্রোন নিয়ে বিভিন্ন প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে প্রতাপ৷ জাপান সফরকালে সেখানে যাওয়ার বিমান ভাড়া পর্যন্ত ছিল না তাঁর৷ মায়ের গয়না বিক্রি করে অর্থের জোগাড় হয়৷ প্রতাপের পরবর্তী আন্তর্জাতিক সম্মান হল ২০১৮ সালে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন গোল্ড মেডেল ইন্টার ন্যাশানাল দ্রোন এক্সপোতে৷ এই সব আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভের পর বিশ্বে নানা দেশে ড্রোনের প্রযুক্তি নিয়ে একাধিক আমন্ত্রণ মূলক কর্মশালায় নিজের বক্তব্য পেশক অরার সুযোগ পেয়েছে৷ প্রতাপের এই সাফল্যের পর তাঁর বাবা মা সহ সকল শিক্ষক যাঁদের ছত্রছায়ায় যে বড় হয়ে উঠেছে, তাঁরা তাঁর নতুন কোনও গবেষণার অপেক্ষায় রয়েছে৷