তিয়াষা গুপ্ত: এক কথায় তিনি অনন্যা। শিক্ষকের মহান আদর্শ নিয়েও আজকাল প্রশ্ন ওঠে। শিক্ষকরা নাকি টিউশন করে পোশাদার হয়ে উঠেছেন। রোজগারের নেশায় ভুলে গেছেন কর্তব্য। কেরালার উষাকুমারী এই ধারণাকে ভেঙে চুরমার করে দিতে পারেন। দেখিয়ে দিয়েছেন, পাহাড়-নদী পেরিয়ে কীভাবে শিক্ষার মহান যজ্ঞে শামিল হওয়া যায়! উপজাতি সম্প্রদায়ের বাচ্চাদের পড়াতে পয়সা রোজগার যে তাঁর কাছে ব্রাত্য তা চোখ বুজে বলাই যায়।
তিরুবনন্তপুরম জেলার আম্বোরি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ১৬ বছর ধরে তিনি পথ চেলেছেন। কীভাবে? ভাবলে শিউড়ে উঠতে হয়। পাহাড়, জঙ্গল, নদী পেরিয়ে কেউ রোজ পৌঁছাতে পারেন তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে? শুধুমাত্র সমাজকে শিক্ষিত করার নেশাই তাঁকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সকাল সাড়ে ৭টায় তাঁর যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে স্কুটিতে সফর শুরু। তারপর নৌকা করে তাঁকে নদী পেরোতে হয়। দুর্গম পাহাড়ি পথও তিনি পেরিয়ে যান। কান্নি উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় তাঁর স্কুল। সেখানে তাঁর জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা করে থাকেন তাঁর ছাত্র ছাত্রীরা।
১৬ বছরে তিনি একদিনও দেরিতে স্কুলে পৌঁছোননি। তিনিই স্কুলের একমাত্র শিক্ষক যিনি সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ছাত্র পড়ান। অসহায় ছাত্ররা যাতে পড়াশুনোয় বিমুখ না হয়, তার দিকে নজর রয়েছে তাঁর। তিনি এই সব বাচ্চাদের খাবারের ব্যবস্থা করেন। তারা যাতে উপযুক্ত পুষ্টিকর খাবার পায়, তার ব্যবস্থাও করেন তিনি।
এই কর্মযজ্ঞ যে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের তা স্বীকার করে নিলেন এই শিক্ষক। তাঁর কথায়, বিনা মাইনেয় শুধু পড়ানোর তাগিদে তিনি বছরের পর বছর এই কাজ করে চলেছেন। তাঁর দৃষ্টান্ত কি সমাজের চোখ খুলে দেবে?