নয়াদিল্লি: বিশ্বজুড়ে করোনা আবহের মধ্যে যখন স্কুলগুলি পুরনো ছন্দে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছে তখন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনল WHO/UNICEF JOINT MONITORING PROGRAMME. তথ্যে প্রকাশ পেল বিশ্বের ৪৩ শতাংশ স্কুলে জল ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ন্যুনতম পরিকাঠামো নেই, যা করোনা পরিস্থিতিতে একান্ত প্রয়োজন। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুশিক্ষা ও শিশুস্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে বলে জানাচ্ছেন ইউনিসেফের একজিকিউটিভ ডিরেক্টর হেনরিয়েটা ফোর।
তিনি আরও বলেন, শিশুশিক্ষারকে সর্বতভাবে গুরুত্ব দিতে হবে, সেক্ষেত্রে স্কুলগুলি ফের খোলার জন্য নিরাপদ পরিস্থিতি তৈরী করতে হবে। হাত পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা, পরিষ্কার পানীয় জল এবং নিরাপদ শৌচের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। রিপোর্টে প্রকাশ বিশ্বজুড়ে ৮১৮ মিলিয়ন শিশু স্কুলে ন্যুনতম হাত ধোয়ার পরিকাঠামো পায় না। ফলে তারা করোনাসহ বিভিন্ন ছোঁয়াচে রোগের প্রভাবে পড়তে পারে। এই শিশুদের এক তৃতীয়াংশই আফ্রিকার সাহারা অঞ্চলভূক্ত। কম উন্নত দেশগুলিতে ১০টির মধ্যে ৭টি স্কুলেই ন্যুনতম হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। অর্ধেক স্কুলে নেই উপযুক্ত শৌচ ও জলের ব্যবস্থা।
রিপোর্টে বলা হয়েছে যেসব সরকার করোনার প্রকোপ কমাতে চায় তাদের লকডাউনের সামংাজিক ও আর্থিক প্রভাবের বিষয়টি মাথায় রেখেই জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে। রিপোর্টে আরও প্রকাশিত, টানা স্কুল বন্ধের খারাপ প্রভাব পড়ছে শিশুদের নিরাপত্তা, সুস্থতা ও শিক্ষার ওপর। WHO-র ডিরে ক্টর জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘাব্রেসিউস জানাচ্ছেন স্কুলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংক্রমণ রুখতে জল, শৌচ এবং পরিচ্ছন্নতা একান্ত প্রয়োজনীয়। রিপোর্টে আরও প্রকাশ, যে ৮১৮ মিলিয়ন শিশু স্কুলে ন্যুনতম হাত ধোয়ার পরিকাঠামো পায় না তাদের মধ্যে ৩৫৫ মিলিয়ন শিশু স্কুলে জল পেলেও সাবান পায় না। ৪৬২ মিলিয়ন শিশু হয় কিছুই পায়না নতুবা হাত ধোয়ার জন্য জল পায় না।
করোনা পরিস্থিতির শুরু দিকে বিশ্বের প্রায় ৬০টি ভয়ানকভাবে সংক্রামিত দেশে ৪জনের মধ্যে ৩জন শিশুই নিজেদের স্কুলে হাত ধোয়ার পরিকাঠামো পায়নি। অর্ধেক শিশুই পানীয় জল পায়নি এবং অর্ধেকের বেশিই পায়নি ন্যুনতম শৌচের ব্যবস্থা। ৩টির মধ্যে ১টি স্কুলে হয় স্বল্প পানীয় জল পরিষেবা রয়েছে নযতো কোনও পানীয় জলই নেই। ৬৯৮ মিলিয়ন শিশু স্কুলে ন্যুনতম শৌচের পরিষেবা পায় না।
স্কুল পুনরায় খোলার জন্য এই রিপোর্টে ১০টি প্রাথমিক প্রক্রিয়া এবং নিরাপত্তার চেকলিস্ট দেওয়া হয়েছে। ইউনেস্কো, ইউনিসেফ, ডব্লুএফপি এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের প্রকাশিত গাইডলাইনের পাশাপাশি রিপোর্টে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের জন্য স্কুল খোলা ও স্কুলে ফেরা শিশুদের জন্য নিরাপত্তার নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। গোটা বিশ্বে হাত পরিষ্কার রাখার জন্য একটি যৌথ কর্মসূচি নিয়েছে ইউনেস্কো এবং হু। এই কর্মসূচির আওতায় পৃথিবীর সবচেয়ে সমস্যাসঙ্কুল দেশগুলির পাশে দাঁড়াতে মনস্থ করেছে এই দুই সংস্থা।