পিরিয়ড হলেই স্কুলছুট? সমস্যা মেটাতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ মহিলার

আজ বিকেল: পিরিয়ড হলেই স্কুলছুট হতে হবে, এই ধারণার বদল আনতে স্বাস্থ্যকর স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ব্যবহৃত ন্যাপকিনের পরিবেশ বান্ধব নিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু করলেন এই মহিলা। তাঁর সংস্থার নাম চ্যারিটন। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা শ্রীমতি ভাবনা গোনু দীর্ঘদিন ধরেই মহিলাদের পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টায় ছিলেন। তারপর বন্ধুর সহযোগিতায় তৈরি করে ফেললেন নিজের সংস্থা চ্যারিটন। তারপর সেই

পিরিয়ড হলেই স্কুলছুট? সমস্যা মেটাতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ মহিলার

আজ বিকেল: পিরিয়ড হলেই স্কুলছুট হতে হবে, এই ধারণার বদল আনতে স্বাস্থ্যকর স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ব্যবহৃত ন্যাপকিনের পরিবেশ বান্ধব নিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু করলেন এই মহিলা। তাঁর সংস্থার নাম চ্যারিটন। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা শ্রীমতি ভাবনা গোনু দীর্ঘদিন ধরেই মহিলাদের পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টায় ছিলেন। তারপর বন্ধুর সহযোগিতায় তৈরি করে ফেললেন নিজের সংস্থা চ্যারিটন। তারপর সেই সংস্থার অধীনেই তৈরি হল স্বাস্থ্যকর স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ব্যবহৃত ন্যাপকিনের ডিসপোজাল মেশিন। ইতিমধ্যেই ভাবনার উদ্যোগে মহারাষ্ট্রের বেশিরভাগ স্কুলে এই ভেন্ডিং মেশিন ও ডিসপোজাল মেশিন পৌঁছেছে।

সাধারণত ছাত্রীদের শৌচালয়ে এই দুরকম মেশিন বসানো হচ্ছে। ভেন্ডিং মেশিনে পাঁচ টাকার কয়েন ফেললেই বেরিয়ে আসবে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ন্যাপকিন। এক একটি মেশিনে এক হাজার করে স্যানিটারি প্যাড ভরা থাকবে, কয়েন ফেলে পড়ুয়ারা তা ব্যবহার করতে পারে। তারপর ব্যবহৃত প্যাড ডাস্টবিনে ফেলার ঝামেলা নেই, সোজাসুজি ডিসপোজাল মেশিনে ঢুকিয় দিতে হবে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ছাইয়ের গুঁড়ো বেরিয়ে আসবে। এর ফলে পরিবেশ দূষণও আটকানো যাবে। প্রতিটি স্কুলে ছাত্রীদের অন্তত দুটি বাথরুমে এই সুবিধা থাকবে।

পিরিয়ড হলেই স্কুলছুট? সমস্যা মেটাতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ মহিলারতিন বছর আগে যখন দেশের স্কুলছুট কিশোরীদের কথা চিন্তা করে ভাবনা গোনু এই কাজ শুরু করেছিলেন, তখন ভাবতেই পারেননি একটু হলেও সাফল্যের মুখ দেখবেন। ২০১৯-র প্রথম লগ্নে এসে তাঁর কণ্ঠে স্বস্তির শ্বাস। তিনি বললেন, দেশের কিশোরীদের একটা বড় অংশই পিরিয়ডের দিনগুলিতে স্কুলে যায় না। তাদের দিকে সহায্যের হাত বাড়িয়েদিতে হলে জীবন শৈলীর পাঠদিন ছাত্রীদের, সেই সঙ্গে গোটা জাতিকেই শিক্ষিত করে তুলুন। নাহলে এই একবিংশ শতকেও পিরিয়ড সংক্রান্ত ছুঁৎমার্গ আমাদের আরও পিছিয়ে দেবে। এক্ষেত্রে বাড়ির মহিলাদের সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে,কেননা কিশোরীরা সবথেকে বেশি মায়ের উপরেই নির্ভর করে।কিন্তু সেই মা কখনওই পিরিয়ড সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মেয়েদের সঙ্গে আলোচনা করেন না। করলেও ভুল বার্তা দেন, যাতে ওই কিশোরী মনে ভয় ও অকারণ লজ্জার বাতাবরণ তৈরি হয়। প্রথমেই বুঝতে হবে ঋতুমতি হওয়া কোনও অশুভ কাজ নয়, এটি একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া। তাই পিরিয়ড সংক্রান্ত আলোচনার সময় মেয়েদের মায়েরা অন্ধ হয়ে থাকবেন না, নাহলে আগামীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে পর্যবসিত হবে। যা দেশের বেশিরভাগ মেয়ের জন্য চরম ক্ষতিকর।

একটা সময় পর্যন্ত মহিলাদের পিরিয়ড হলে রান্নাঘরে ঢুকতে দেওয়া হত না। এটা সাধারণত বিশ্রামের কথা ভেবেই করা হত। কিন্তু সেই বিষয়টিকে এখনও ধর্মীয় ভিত্তিতে ব্যাখ্যাকরা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, পিরিয়ডের সময় মেয়েরা শারীরিক ভাবে অশুদ্ধ থাকেন, তাই তাঁদের রান্নাঘরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। এটা একটা অবান্তর ব্যাখ্যা। ভাবনা গোনু মনে করেন দেশের বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে তাঁর রেড ডট রেভলিউশনের প্রচার করবেন, এবং এই অশুদ্ধতা সংক্রান্ত কুসংস্কার দূর করবেন। এখন সবে মহারাষ্ট্রে তাঁর পাইলট প্রজেক্ট চলছে ধীরে ধীরে গোটা দেশের শহর শহরতলি থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলেও এই প্রচার শুরু হবে। কাজ এগোলেই স্বাস্থ্যকর পিরিয়ড দেশের মহিলাদের সুস্থ জীবনের আশ্বাস দিতে পারবে। ইতিমধ্যেই অনলাইন সংস্থা কেটো-র মাধ্যমে ক্রাউড ফান্ডিং শুরু করেছে চ্যারিটন। ফান্ড রেইজিংয়ের দৌলতে ১০ লক্ষ টাকা হাতেও এসেছে। মেশিনগুলি ইনস্টল করার কাজ চলছে। তিনি মনে করেন, যত দিন না দেশের মহিলারা সর্বসমক্ষে তাঁদের পিরিয়ড নিয়ে সমস্যা ও তা দূরিকরণ সংক্রান্ত আলোচনা করতে অভ্যস্ত হচ্ছেন,ততদিন তাঁর রেডডট রেভলিউশনের প্রচার চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + 11 =