প্রাক্তন পুলিশ কর্তাকে কেন উপাচার্য করা হল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন! জারি নবান্ন-রাজভবনের বিরোধ

প্রাক্তন পুলিশ কর্তাকে কেন উপাচার্য করা হল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন! জারি নবান্ন-রাজভবনের বিরোধ

questions

নিজস্ব প্রতিনিধি: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। ফের পুলিশকর্তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হল। এর পিছনে কি কারণ থাকতে পারে তা খোঁজার চেষ্টা করছেন শিক্ষাবিদরা। (questions)

উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে নবান্ন-রাজভবনের বিবাদকে কিছুতেই যেন থামানো যাচ্ছে না। দিন দিন সংঘাত বাড়ছে। আর বিষয়টি নিয়ে নবান্ন-রাজভবনের টানাপড়েনের মধ্যেই আরও ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে প্রাক্তন পুলিশকর্তা সি এম রবীন্দ্রন’কে নিয়োগ করায় রাজ্যপালের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠছে। উল্লেখ্য উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের বহুদিন ধরেই বিবাদ চলছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর অভিযোগ, উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ না করেই তাঁদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে নিজের মতো করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস। তাই যথারীতি বিতর্ক তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সি এম রবীন্দ্রনকে। কিসের ভিত্তিতে তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিছুদিন আগেই রাজ্যপালের কাছ থেকে ‘কর্মযোগী’ পুরস্কার পেয়েছেন রবীন্দ্রন। ১৯৭৭ ব্যাচের এই আইপিএস অফিসার প্রশাসনিক স্তরে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন যোগ্যতার সঙ্গে। সিকিম পুলিশের ডিজিপি হিসেবেও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। নেপালের কাঠমান্ডুতে ভারতীয় দূতাবাসে সচিব পদেও ছিলেন। তাই অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হল সেই প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। উল্লেখ্য দশ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে তবেই উপাচার্য পদে কাউকে নিয়োগ করা যায়  বলে রাজ্য সরকার একাধিকবার জানিয়েছে। সেক্ষেত্রে রাজ্যপাল যাদের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করেছেন তাঁদের অধিকাংশের অধ্যাপনার দশ বছরের অভিজ্ঞতা নেই। যদিও রাজ্যপালের দাবি অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে এমন কোনও নিয়ম নেই।  

যারা সুদীর্ঘকাল অধ্যাপনার কাছে যুক্ত রয়েছেন এমন কাউকেই সাধারণত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়। সেখানে কিছুদিন আগেই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হয় কেরলের এক প্রাক্তন পুলিশ কর্তাকে। বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্য। কিন্তু এবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েও একই রাস্তায় হাঁটতে দেখা গেল সিভি আনন্দ বোসকে। উল্লেখ্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৬ মাসে এই নিয়ে চারবার অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে কাউকে নিয়োগ করা হল। এভাবে কী পঠনপাঠন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে? পুলিশকর্তা হিসেবে দায়িত্ব সফলভাবে পালন করলেও উপাচার্য হিসেবে কতটা ভাল কাজ করতে পারবেন সিএম রবীন্দ্রন, সেই প্রশ্ন উঠছে। নবান্নের অভিযোগ রাজ্যপাল এই ইস্যুতে নিজের খেয়াল খুশি মতো চলছেন। সবমিলিয়ে উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে নবান্ন-রাজভবনের যে টানাপড়েন চলছে তা বাংলার শিক্ষা জগতের জন্য একেবারেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 + five =