কলকাতা: রাজ্যের কোষাগারে অভাব৷ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই দাবি করেন৷ এই নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু কোষাগারে টান থাকলেও পুজো কমিটির অনুদানে কার্পণ্য করেননি মুখ্যমন্ত্রী৷ ১০ হাজার টাকার অনুদান এক লাফে ২৫ হাজার টাকা বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আর এই অনুদান নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক৷
অনেকেই বলতে শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এই বর্ধিত ঘোষণা যদি স্কুলের মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ করা হত তাহলে উপকৃত হতে পারত রাজ্যের ৫০ লক্ষ গরিব ছাত্র-ছাত্রী৷ সেই অর্থে অন্তত চার দিন খাওয়া খাওয়ানো যেত ডিম ভাত৷
পুজোর অনুদান এক লাফে দ্বিগুণ করে দেয়ার ঘোষণায় চূড়ান্ত ক্ষুব্দ বামফ্রন্ট৷ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে কটাক্ষ করে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর ২৫ হাজার টাকা করে ২৮ হাজার অনুমোদিত পুজো কমিটিকে দেওয়া ঘোষণা করেছেন৷ এর জন্য কমবেশি ৭০ কোটি টাকা খরচ হবে রাজ্যের৷ আর এই টাকা যদি মিড ডে মিলের খাতে বরাদ্দ করা হত, তাহলে অন্তত ৫০ লক্ষ গরীব পড়ুয়াকে সপ্তাহে অন্তত চার দিন ডিম ভাত খেয়ে যেত৷ ফলে, কিছুটা হলেও অপুষ্টি দূর করা যেত৷ কিন্তু তা হয়নি৷
বামেদের আরও অভিযোগ, দুর্গোৎসবকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব বাড়াতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন৷ তাঁদের অভিযোগ, এভাবে অর্থ বিলিয়ে আদতে সরকারের কোষাগারে ক্ষতি করা হচ্ছে৷
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় সরকারি কর্মচারী মহলেও চূড়ান্ত ক্ষোভ তৈরি হয়েছে৷ কেননা ডিএ দিয়ে রায় ঘোষণা হওয়ার পরও এখনও পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি৷ পে কমিশনের রিপোর্ট পেশ করতে পারেনি ষষ্ঠ বেতন কমিশন৷ আর এই নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মচারীদের একাংশ৷
শিক্ষকদের মধ্যেও রয়েছে একাধিক দাবি-দাওয়া রয়েছে৷ শিক্ষকদের সমস্যা না মিটিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই পুজো কমিটির বরাদ্দ খুশি শিক্ষকদের একাংশ৷ তাঁদের অভিযোগ, পুজো পাঁচ দিনের উৎসবে সরকারি ভাবে ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে আদতে বাংলার কোন স্থায়ী উন্নয়ন সম্ভব? এই টাকা দিয়ে যদি মিড ডে মিলের কাজে লাগান হত তাহলে সুরক্ষিত হত বাংলার ভবিষ্যৎ, মত শিক্ষক মহলের একাংশ৷