নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাসের অতিমারী এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পৃথিবীর বুকে যে অভিশাপ নিয়ে এসেছিল, ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে তার মেঘ। ভ্যাকসিনের আগমনে ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে চারপাশের পরিস্থিতি। আর সেই সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই নিত্যনতুন সম্ভাবনায় ভরে উঠছে নানা মহল। করোনা পরবর্তী সেই সম্ভাবনাময় সময়েই বিশ্বের দরবারে আরো একবার উজ্জ্বল হল ভারতের মুখ।
ভারতীয় পদার্থবিদ্যার জগতে একটি অন্যতম জনপ্রিয় নাম হল রোহিনী গোড়বোলে। পদার্থবিদ্যায় তাঁর অবদানের জন্য পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। এবার নিজের কৃতিত্বে ফ্রান্সের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মানটিও লাভ করলেন রোহিনী গোড়বোলে।তাঁর এই সাফল্যে আন্তর্জাতিক মহলে দেশের সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্রের খবর, স্বনামধন্য পদার্থবিদ রোহিনী গোড়বোলে বর্তমানে বেঙ্গালুরুর ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স’-এ (আইআইএসসি) ‘সেন্টার ফর হাই এনার্জি ফিজিক্স’-এ অধ্যাপনা করেন। তিনি ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে যৌথ প্রকল্পের পাশাপাশি আরো একাধিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন। বিশেষত বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অঙ্কের (স্টেম) ক্ষেত্রে আরও বেশি করে মহিলাদের এগিয়ে আসার জন্য যে কাজ করেছেন রোহিনী গোড়বোলে, তাই তাঁকে ফ্রান্সের এই উচ্চ সম্মানের দাবিদার করে তুলেছে।
জানা গেছে, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানবকল্যাণমুখী কীর্তির জন্য বিখ্যাত ব্যক্তিদের যে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করে ফ্রান্স, এদিন রোহিনী গোড়বোলেও পেয়েছেন সেই সম্মান। ৬৮ বছর বয়সী রোহিনী দেবী ১৯৬২ সালে পুণেতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পুণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি। এরপর স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনা করেন আইআইটি বম্বে থেকে। নিউইয়র্কের স্টোনি ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পিএইচডি করতে গিয়েছিলেন রোহিনী গোড়বোলে। ২০১৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।
ফ্রান্সের উচ্চ সম্মান লাভের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রোহিনী দেবী জানিয়েছেন বিজ্ঞান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে মহিলাদের উন্নয়নই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। তাঁর কথায়, “লিঙ্গের উপর কারও কেরিয়ার বা সুযোগ নির্ভরশীল নয়।” শুধুমাত্র কমবয়সি মহিলাদের জন্য নয়, কম বয়সের পুরুষদের জন্যও এই বার্তা দিয়েছেন তিনি। ভারতের মহিলা বিজ্ঞানীদের নিয়ে জীবনীমূলক বইও লিখেছেন রোহিনী গোড়বোলে।