নয়াদিল্লি: ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে চীনের উহান প্রদেশে প্রথম দেখা মিলেছিল করোনা ভাইরাসের। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত বিশ্ব জুড়ে যে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে এই ভাইরাস, পৃথিবীর ইতিহাসে তা কালো অক্ষরে লেখা থাকবে চিরকাল। শুধু যে অজস্র মানুষের প্রাণ নিয়েছে তাই নয়, এই ভাইরাস আদতে মানুষের রোজকার চেনা জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেই দিয়েছে এলোমেলো করে। জনজীবনে করোনা অতিমারীর প্রভাব যে কতটা সাংঘাতিক আর সুদূরপ্রসারী, সম্প্রতি উঠে আসা এক তথ্যই তার জানান দিচ্ছে।
করোনা আবহে লকডাউন এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতিতে পকেটে টান পড়েছে অনেকেরই। কেউ কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছেন, কেউ বা দীর্ঘদিন পান নি বেতন। আর তার জেরেই এবার বাচ্চাদের ইংরাজি মাধ্যম বেসরকারি স্কুলগুলো থেকে অপেক্ষাকৃত সস্তার স্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করেছেন বাবা মায়েরা। সম্প্রতি উঠে আসা তথ্য থেকে জানা গেছে, কলকাতার একাধিক বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছেই চলতি শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়াদের ট্রান্সফার সার্টিফিকেটের জন্য জমা পড়েছে আবেদন। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে অভিভাবকরা জানিয়েছেন অতিমারীর আবহে চরম আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা। আর তার জেরেই নিরুপায় হয়ে নিতে হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।
যদিও ছেলে মেয়েদের স্কুল বদলের এই আবেদনের সংখ্যাটা বিশাল নয়, কিন্তু স্কুল প্রধানদের মতে অন্যান্য বছরের তুলনায় তা অনেকটাই বেশি। আর অন্যান্য বারের সঙ্গে এর তফাৎ হল, শহর কিংবা বাসস্থান বদলের জন্য স্কুল বদলের পরিবর্তে এবছর আর্থিক কারণে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে পড়ুয়ারা। এমনকি কেউ কেউ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে ‘দেশের বাড়ি’তেও। লকডাউন পরবর্তী সময়ে বেসরকারি স্কুল বদল সংক্রান্ত এই তথ্য নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। সেন্ট অগাস্টিন ডে স্কুলের প্রধান রিচার্ড গ্যাসপার জানিয়েছেন, “কিছু অভিভাবক নভেম্বর মাসে ট্রান্সফার সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। আমরা কারণ জানতে চাইলে তাঁরা জানান, তাঁরা বাচ্চাদের বাংলা মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করবেন, যেখানে বেতন কম।” করোনা কালে অভিভাবকদের বেতনে ঘাটতি কিংবা ব্যবসায় ক্ষতিই এই সিদ্ধান্তের কারণ বলে জানিয়েছেন তিনি।