কলকাতা: করোনার জেরে রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পূর্ণ না হলেও, শিক্ষা বোর্ড চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে, পড়ুয়ারা অসাধারণ নম্বর পেয়েছেন৷ এই বছর এত বেশি সংখ্যায় পড়ুয়ারা ভালো ফলাফল করায় রাজ্য নজির গড়েছে৷ কিন্তু এরফলে বর্তমানে সমস্যায় পড়েছে জেলার কলেজগুলি৷ ভালো ফলাফল করায় কলকাতা শহরের কলেজগুলিতে ভর্তির আবেদন করেছে রাজ্যের একাধিক পড়ুয়া, ফলে প্রত্যন্ত জেলার কলেজগুলির আসন এখন ফাঁকা।
উত্তর ২৪ পরগনা ও উত্তর শহরতলির কলেজগুলিতে ভর্তির আবেদন অনেকটাই কমেছে চলতি বছর। সেখানে কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে আবেদন জমা পড়েছে ৫৬ হাজার ২১৫টি। পাশাপাশি আমহার্স্ট্রিট সিটি কলেজের আবেদনকারীর সংখ্যা ২০ হাজার ৫০০। আবার বঙ্গবাসী ও ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ১৩ হাজার ২৩৫। দেখা গেছে, পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত হাতে গোনা কয়েকটি কলেজ ছাড়া বাকি কলেজে আবেদন সংখ্যা নেতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে।
কলেজ প্রশাসকদের মতে, বেশি নম্বর পাওয়ার ফলেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের পড়ুয়ারা শহরমুখো হয়েছে। সেখানে ভিড়ের ঠেলায় সুযোগ না পেলে তারা নিজেদের জেলাতেই ফিরে আসবে। ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু কলেজেই ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে কলকাতার কলেজে জায়গা না পেয়ে বারাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে চাইলে এরপর পড়ুয়ারা সমস্যায় পরবে। যদিও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলির পাশাপাশি প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া এখনও প্রাথমিক স্তরেই আটকে আছে।
প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে এ বছর প্রবেশিকা পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। সেক্ষেত্রে যাদবপুর তরফে মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের ওপর কিছুটা নির্ভর করেই পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। এদিকে প্রেসিডেন্সি কলেজ উচ্চমাধ্যমিকের আগেই একবার স্নাতকে ভর্তির জন্য প্রবেশিকা নিয়েছিল, দ্বিতীয় দফায় আবারও তা নেওয়া হচ্ছে। ফলে উচ্চমাধ্যমিকে ভাল নম্বর পেয়ে বিভিন্ন বোর্ড থেকে ছাত্রছাত্রীরা শহরের নামকরা কলেজে ভর্তি হতে চাইবে এটা খুব স্বাভাবিক। তাই কলকাতার কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়ুয়াদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে।
বারাসাতের রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত একটি কলেজের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, চলতি বছর স্নাতক স্তরের একাধিক বিষয়ে আবেদন খুবই কম হয়েছে। ফলে চিন্তায় আছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে পিএন দাস কলেজ সূত্রে খবর, ওই কলেজের ভর্তির কাজ মাঝ পর্যায়ে রয়েছে। তাঁর মতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ভর্তির আবেদনে সাড়া মিলবে।