কলকাতা: শিক্ষকের অভাবে আরও একটি স্কুল বন্ধ হল রাজ্যে৷ বীরভূমে কাশিয়ারা জুনিয়র হাইস্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় স্কুলটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে খবর৷ অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়ে দ্রুত স্কুল খোলার আশ্বাস দিয়েছে শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের৷ কাশিয়ারা জুনিয়র হাইস্কুলে দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরে ১০টি, পুরুলিয়া ও হুগলিতে বন্ধ একটি স্কুল-সহ মোট ১৩টি স্কুল বন্ধ হল৷ একই সঙ্গে খাস কলকাতায় বন্ধ হওয়ার মুখে ১৬০টি স্কুল৷
জানা গিয়েছে, শিক্ষকের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বীরভূম জেলার কাশিয়ারা জুনিয়ার হাই স্কুল৷ স্কুল বন্ধ হওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে৷ অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি৷ আর তার জেরে লাটে মিড ডে মিল৷ দীর্ঘদিন ধরে চলা অচলাবস্থার জেরে অবশেষে বন্ধ হয়ে গিয়েছে এই স্কুলটি৷ আর তাতেই স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে৷ স্থানীয়দের অভিযোগ শুনে তড়িঘড়ি উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন৷
অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুরে ১০টি সরকারি স্কুল ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে খবর৷ ২০২০-২১ অর্থবর্ষে মেদিনীপুর শহর ও শহর লাগোয়া ১০ প্রাথমিক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর৷ এইসব স্কুলগুলিতে শিক্ষক শিক্ষিকা অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছেন৷
শিক্ষকের অভাবে চালু হলেও তালা বন্ধ হয়ে গিয়েছে একাধিক স্কুলে৷ নবনির্মিত দুতলা বাড়ি, টেবিল-চেয়ার থাকলেও শিক্ষক নেই৷ আর তার জেরে তিন বছর পর থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে জঙ্গলমহল বান্দোয়ানের গুডুর জুনিয়র হাই স্কুল৷ ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে অতিথি শিক্ষক দিয়ে চালু হয়েছিল স্কুল৷ ২০১৯ সালে শিক্ষকের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় পঠন-পাঠন৷ বেশ কয়েক কিলোমিটার পথ পেরিয়ে পড়ুয়াদের লেখাপড়া করতে যাতে হচ্ছে৷ জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে স্থানীয় প্রশাসন, সকলের দাবি, স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে কোন শিক্ষক না পাওয়ায় বর্তমানে স্কুলটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ শিক্ষার নিয়োগের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ৷ অন্যদিকে হুগলির ভোয়াগাছি জুনিয়র হাই স্কুলও বন্ধ৷ পোলবার এই জুনিয়র হাই স্কুলটি ২০১৫ সালে তৈরি হয়েছিল৷ তারপর থেকে ক্রমাগত শিক্ষকের অভাবে স্কুলটি এখন বন্ধ৷
খাস কলকাতায় প্রাথমিক সহ একাধিক হাইস্কুলের পরীক্ষার পড়ুয়া সংখ্যা শূন্য৷ পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে শহরের ১৬০ স্কুল বন্ধ হওয়ার মুখে৷ সরকারি সূত্রে খবর, কলকাতায় সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত হাই স্কুলের সংখ্যা ৫৬৪টি। পড়ুয়া না থাকা এমন স্কুলের ৭৫টি স্কুলকে চিহ্নিত করা হয়েছে সরকার৷ যেখানে পড়ুয়া সংখ্যা কোথাও শূন্য, কোথায় ৫, ৬, ১০৷ কলকাতায় সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলের চূড়ান্ত বেহাল অবস্থায় রয়েছে৷ কলকাতায় সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ১ হাজার ২৬৪টি৷ বন্ধের মুখে প্রায় ৬০টি প্রাথমিক স্কুল৷