আরও কতদিন বন্ধ থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান? ঘোষণা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের

আরও কতদিন বন্ধ থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান? ঘোষণা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের

নয়াদিল্লি: করোনা রুখতে জারি হয়েছিল বিশ্বের দীর্ঘতম লকডাউন৷ দীর্ঘ লকডাউন হলেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি সংক্রমণ৷ একদিকে যেমন করোনার প্রভাব, অন্যদিকে বেহাল দেশের অর্থনীতি৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আনলক পর্ব শুরু হয়েছে৷ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবিকা বাঁচাতে পথে মানতে বাধ্য হয়েছে জনতা৷ করোনা সংক্রমণ রুখতে টানা ৭ মাস বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ ধাপে ধাপে স্কুল-কলেজ খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ কিন্তু, তার মধ্যে নতুন করে উদ্বোগ বাড়িয়েছে আইসিএমআর৷ এবার সব দিক বিবেচনা করে দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার মেয়াদ আরও কিছু দিন বাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক৷

করোনা সংক্রমণের প্রকোপ থেকে এখনও মুক্তি মেলেনি৷ উল্টে কেরল-বাংলা সহ ৫ রাজ্যে বেড়েছে সংক্রমণ৷ পরিস্থিতি যে এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তা বেমালুন টের পেয়েছে কেন্দ্র৷ পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবার আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পক্ষে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ তবে, কিছু ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায় রাজ্যের উপর চাপিয়েছে কেন্দ্র৷ জানানো হয়েছে, গ্রেডের ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে ‘কেস-টু-কেস’ দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য৷ জানানো হয়েছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তা ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে৷ অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে৷ তবে, তা নির্ভর করবে রাজ্য সরকারের উপর৷

গত ৩০ সেপ্টেম্বর আনলক ৫ পর্বের নির্দেশ জারি করেছিল কেন্দ্র৷ সেখানে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই পড়ুয়াদের নিয়মিত উপস্থিতির জন্য বাধ্য করতে পারে না বলেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ সেই সঙ্গে অনলাইনে পঠনপাঠন চালিয়ে যেতে বলা বলা হয়েছিল৷ নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছিল, ১৫ অক্টোবরের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ তবে, অবশ্যই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে৷ যে স্কুলে অনলাইন ক্লাস করা সম্ভব, সেখানে তা চালিয়ে যেতে হবে৷ অক্টোবরের দ্বিতীয় ভাগের মতোই নভেম্বরেও অভিভাবকদের লিখিত অনুমতি নিয়ে স্কুলে যে পারবেন পড়ুয়া৷ তবে তা নিয়মিত নয়৷ উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়৷ সেক্ষেত্রেও নিয়ম বিধি পালন করতে হবে৷ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত রাজ্য সিদ্ধান্ত নিতে পারবে৷ ল্যাবরেটরি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানের অনুমতি লাগবে৷

স্কুল খোলার বিষয়ে তৎপরতার আবহে আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গব উদ্বেগ বাড়িয়ে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, কোভিড সংক্রমণ বিপুল হারে ছড়াতে পারে শিশুরা৷ এত দিন মনে করা হচ্ছিল, শিশুদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তুলনায় কম৷ কিন্তু, আইসিএমআরের সমীক্ষা সমস্ত ধারণা এবার বদলে দিয়েছে৷ আইসিএমআরের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভারতে ১৭ বছর বয়েসের নিচে মাত্র ৮% সংক্রমণের শিকার হয়েছে৷ দিনে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে৷

আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল ভার্গব জানিয়েছেন, ৫ বছরের কম শিশুদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ১ শতাংশের কম হলেও বাড়ছে উদ্বেগ৷ সাধারণত ৫ বছরের কম শিশুদের মধ্যে ভাইরাসের আক্রমণ বাড়ছে৷ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে৷ জ্বর-সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যাচ্ছে৷ স্নায়বিক বৈকল্য ঘটেছে বলেও জানানো হয়েছে৷  

আইসিএমআরের এই তথ্যে নতুন করে বেড়েছে উদ্বেগ৷ কেননা, আনলক-৫ পর্বে স্কুল-কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তৎপরতা শুরু হয়েছে৷ বেশ কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই স্কুল খুলে গিয়েছে৷ বাংলায় কবে, কীভাবে স্কুল খুলবে? সে বিষয়ে এখন ভাবা যাচ্ছে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শীতের সময় করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷ ফলে, আগামী দিনে স্কুল কলেজ খোলা নিয়ে নতুন করে তৈরি হচ্ছে উদ্বেগ৷ কেননা, দেশের বড় অংশের পড়ুয়ার বয়স ১৮ বছরের নিচে৷ প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের নিয়ে এবার বাড়ছে চিন্তা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − nine =