আজ বিকেল: দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরতে না ফিরতেই বিজেপির স্বৈরাচারী রূপ প্রকাশ্যে। অষ্টমশ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করার প্রশ্নে তীব্র ক্ষোভ দাক্ষিণাত্যে। এই ক্ষোভের মুখে হিন্দিভাষা চাপিয়ে দেওয়ার ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখতে বাধ্য হল কেন্দ্র। রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে তা জানিয়েও দিয়েছেন মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল। তিনি বলেন জোর করে কোনও ভাষাকেই পড়ুয়াদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হবে না। প্রস্তাব রাখা হয়েছে, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা হবে, বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, এমন কিছু সিদ্ঘান্ত সরকার নেবে না, যা চাপিয়ে দেওয়ার নীতিকেই প্রতিষ্ঠিত করে।
বৃহস্পতিবার মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক৷ তার পরের দিন, মন্ত্রকে জমা পড়েছে জাতীয় শিক্ষা নীতির খসড়া ৷ সেখানেই দেশের সব রাজ্যেই অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি ভাষা পড়ানো বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়৷ এর পরেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে #StopHindiImposition হ্যাশট্যাগ সহকারে।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষা নীতির প্রধান, ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে কস্তুরীরঙ্গন৷ তাঁরই নেতৃত্বে জাতীয় শিক্ষা নীতির খসড়া তৈরি হয়েছে। সেই খসড়ায় দেখা যাচ্ছে, দেশের সব স্কুলে তিনটি ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক৷ হিন্দিভাষী রাজ্যে হিন্দির সঙ্গে ইংরেজি ও যে কোনও একটি ভারতীয় আধুনিক ভাষা শিখতে হবে৷ অ-হিন্দিভাষী রাজ্যে হিন্দি এবং ইংরেজির সঙ্গে শিখতে পারা যাবে একটি আঞ্চলিক ভাষা৷ এর পরেই দক্ষিণে এনডিএ-র শরিক এডিএমকে এবং পিএমকে জানিয়ে দিয়েছে, অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলির উপর জোর করে হিন্দি ভাষা শেখার ফরমান চাপিয়ে দেওয়া হলে দেশের বহুত্ববাদী চিন্তাধারায় আঘাত লাগবে। তামিলনাড়ুর এডিএমকে সরকারের শিক্ষামন্ত্রী কেএ সেঙ্গোত্তাইয়ান জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা কেন্দ্রের এই নীতি মানবেন না। ‘‘তামিলনাড়ু দু’টি ভাষার নীতি নিয়েই চলবে। শুধু তামিল ও ইংরেজিই শেখানো হবে।’’– বলেছেন তিনি।
এদিকে পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখেই প্রমাদ গুনছে কেন্দ্র। স্বয়ং কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন সচিব আর সুব্রহ্মণ্যম দেশজুড়ে ভাষাগত কারণে জমে ওঠা বিক্ষোভকে প্রশমিত করতে একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, কোনও ভাষাকেই বাধ্যতামূলক ভাবে চাপিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই সরকারের।