প্রাথমিক শিক্ষায় নয়া পরিকল্পনা রাজ্যের, ক্ষোভে আগুনে ঘৃতাহুতির আশঙ্কা

কলকাতা: যোগ্যতা বাড়লেও বাড়েনি বেতন৷ ঝুলে মহার্ঘ ভাতা মামলা৷ বাড়ানো হয়েছে ষষ্ঠ বেতন বেতন কমিশনের মেয়াদ৷ বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে পুলিশি তাণ্ডবের শিকার হতে হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষকদের বড় অংশকে৷ বেতন বৃদ্ধি না হওয়ায় এমনিতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ৷ এসেই সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালতে চলেছে শিক্ষা দপ্তরের নয়া সিদ্ধান্ত৷ প্রাথমিক শিক্ষকদের ঘাড়ে চাপ বাড়িয়ে

প্রাথমিক শিক্ষায় নয়া পরিকল্পনা রাজ্যের, ক্ষোভে আগুনে ঘৃতাহুতির আশঙ্কা

কলকাতা: যোগ্যতা বাড়লেও বাড়েনি বেতন৷ ঝুলে মহার্ঘ ভাতা মামলা৷ বাড়ানো হয়েছে ষষ্ঠ বেতন বেতন কমিশনের মেয়াদ৷ বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে পুলিশি তাণ্ডবের শিকার হতে হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষকদের বড় অংশকে৷ বেতন বৃদ্ধি না হওয়ায় এমনিতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ৷ এসেই সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালতে চলেছে শিক্ষা দপ্তরের নয়া সিদ্ধান্ত৷

প্রাথমিক শিক্ষকদের ঘাড়ে চাপ বাড়িয়ে এবার পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিকের যুক্ত করার পরিকল্পনা নিতে চলেছে সরকার৷ সেই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে প্রাথমিক স্কুলগুলিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা গ্রহণের পথে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর৷ সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে শিক্ষা দপ্তর থেকে ডিআইদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ তাতে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে বলে খবর৷

স্কুলের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কথা বলা হয়েছে৷ যে সমস্ত স্কুলগুলিতে পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে, তাও জানতে বলা হয়েছে৷ বর্তমানে বাংলার প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ৫০ হাজার ১০৮ টি৷ পড়ুয়া সংখ্যা কয়েক লাখ৷ যদি, প্রাথমিকের সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণির যুক্ত করা হয় তাহলে পড়ুয়া সংখ্যা এক লাফে বেড়ে দাঁড়াতে পারে  ২৫ লখার কাছাকাছি৷

ফলে, পড়ুয়ার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে চালাতে পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন৷ আর সেই কারণে কোন কোন স্কুলে কটি নতুন শ্রেণিকক্ষ তৈরি করতে হবে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে৷ স্কুল বাড়িগুলির কী অবস্থায় রয়েছে, এই মুহূর্তে পুরনো বিল্ডিং হলে তার কোন সংস্কারের প্রয়োজন আছে কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে৷ নতুন করে পরিকাঠামো তৈরি করতে কত খরচ পড়বে তার হিসাব চাওয়া হয়েছে বলে খবর৷ জানা গিয়েছে, শিক্ষাদপ্তর প্রাথমিকভাবে অনুমান করছে, যদি পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের যথাযথ পরিকাঠামোর আওতায় এনে শিক্ষা দিতে হয় তাহলে আরও ৪০ হাজার নতুন শ্রেণিকক্ষ তৈরি করতে হবে৷ শিক্ষা দপ্তরের প্রধান উদ্দেশ্য, পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিকের সঙ্গে যুক্ত করা৷

দেশের সর্বত্র এমন প্রাথমিক শিক্ষা প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া হয় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত৷ তবে পশ্চিমবঙ্গে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া হয়৷ শিক্ষক মহলের একাংশের বক্তব্য, এর পেছনে সরকারের দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে৷ প্রথমত,  সর্বভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সামঞ্জস্য তৈরি করা৷ দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক৷ পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিকের সঙ্গে যুক্ত করা হয়, তাহলে বছরে সরকারের সাশ্রয় হবে কয়েক হাজার কোটি টাকা৷

সূত্রের খবর, পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা যদি হাইস্কুলের সঙ্গে জুড়ে থাকে, তাহলে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করতে বিপুল খরচ৷ তুলনায় প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য খরচ তুলনামূলক অনেক কম৷ যদি সরকার পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিকের মধ্যে আনতে পারে, সে ক্ষেত্রে প্রতি বছর সরকারি খাতে ৪০ কোটি টাকা বাঁচাতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে৷ আর তাতে প্রাথমিক শিক্ষকদের উপর যে বাড়তি বোঝা বাড়বে, সেটাও মেনে নিচ্ছেন শিক্ষক মহলের একাংশ৷ এমনিতেই প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন নিয়ে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে৷ এই পরিস্থিতে প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণির যুক্ত করার যে পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে, তাতে শিক্ষক মহলে ক্ষোভ তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলেই আশঙ্কা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − three =