ক্লাসরুমের গভীর বৈষম্য দূর করত ব্যর্থ কেন্দ্রের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি

ক্লাসরুমের গভীর বৈষম্য দূর করত ব্যর্থ কেন্দ্রের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি

 

নয়াদিল্লি:  কেন্দ্রের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি ভারতে এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা করেছে৷ এই নীতি শিক্ষার প্রতি আরও মানবিক দৃষ্টি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়৷ শৈশব শিক্ষা উপেক্ষিত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে প্রাথমিকে মাতৃ ভাষায় শিক্ষাদানের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ উচ্চ শিক্ষায় আনা হয়েছে একাধিক সুযোগ সুবিধা৷ গত পাঁচ বছর ধরে আলাপ-আলোচনার পর এই নীতিতে অনেক ইতিবাচক রসদ আনা হয়েছে, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে৷ এত কিছুর পরেও দুর্ভাগ্যবশত দেশের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি শিক্ষা ব্যবস্থার গভীর বৈষম্যগুলি দূর করতে ব্যর্থ৷ 
 

আরও পড়ুন- কুর্নিশ! ওয়ার্ল্ড বুকে ‘সেরা সমাজসেবী’র সম্মানে কলকাতা পুলিশের ‘শবর পিতা’

জাতি, ধর্ম, বর্ণ বা ভৌগলিক অবস্থান ভেদে দেশের প্রতিটি তরুণ নাগরিককে উচ্চমানের শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হয়নি নয়া শিক্ষানীতিতে৷ অসম শিক্ষার অর্থ জীবনে অসম সুযোগ তৈরি হওয়া৷ এপ ফলে তৈরি হবে অসম ভারত৷ এই শিক্ষানীতি গ্রহণের সময় মানবাধিকারের দায়বদ্ধতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অবৈষম্যমূলক, সকলের জন্য সমান শিক্ষার অধিকারের কথা বিবেচনা করা হয়নি৷ 

আরও পড়ুন- JEE, NEET স্থগিতের দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় পড়ুয়াদের

কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই নীতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে৷ এই শিক্ষানীতিতে বৃত্তিমূলক, অপ্রাতিষ্ঠানিক এবং ডিস্টেন্স এডুকেশনের উপর জোড় দেওয়া হয়েছে৷ এর ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং দরিদ্র পরিবারের শিশুদের নিম্ন মানের শিক্ষার ঝুঁকি থাকছে৷ ফলে মোটা বেতনের চাকরির সুযোগ খোলা থাকছে কেবলমাত্র অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছ্বল পড়ুয়াদের কাছে৷ বিশ্বব্যাপী বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হল অসম অ্যাকাডেমিক মান৷ এই সমস্যার কীভাবে সমাধান হবে, তা এই শিক্ষানীতিতে অস্পষ্ট৷ 

আরও পড়ুন- নয়া শিক্ষানীতির ‘ত্রিভাষা নীতি’তে আপত্তি, ‘দ্বিভাষী নীতি’র পক্ষে সওয়াল

আরও একটি সমস্যা হল, ভারতের বৃত্তিমূলক শিক্ষা বর্তমানে লিঙ্গ এবং বর্ণ ভিত্তিক দিকটিকে আরও শক্তিশালী করে৷ ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য এই বৃত্তিমূলক ইনটার্নশিপ চালু করার চিন্তাভাবনা শিশু শ্রমকেই উৎসাহিত করবে৷ ড্রপআউট প্রতিরোধের নীতিগত অভিপ্রায় সত্ত্বেও বাড়বে শিশুশ্রম৷ এছাড়াও গ্রাম ভারতের স্কুলগুলিতে একুশ শতকের দক্ষতা তৈরি করার জন্য একুশ শতকের উন্নত পরিকাঠামো তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *