নয়াদিল্লি: প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বড়সড় বদল ঘটাল কেন্দ্র সরকার৷ স্কুলে পঠন-পাঠনের পরিকাঠামো আমূল বদল করা হয়েছে৷ এই মুহূর্তে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিন্যাস রয়েছে৷ কিন্তু নয়া শিক্ষানীতিতে সেই সমস্ত স্তর ভেঙে দেওয়া হয়েছে৷ প্রাক-প্রাথমিকের সঙ্গে মিশছে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা৷
আরও পড়ুন- স্কুলশিক্ষায় আমূল বদল, গুরুত্বহীন মাধ্যমিক! নয়া শিক্ষানীতিতে অনুমোদন কেন্দ্রের
নয়া শিক্ষানীতিতে জানানো হয়েছে, প্রাক প্রাথমিকে যুক্ত হবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি৷ এরপর প্রিপারেটরি বা প্রস্তুতিমূলক বছরে আনা হবে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিকে৷কেন্দ্রে নয়া শিক্ষানীতিতে এই মুহূর্তে প্রাক-প্রাথমিকের সঙ্গে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ অঙ্গনওয়াড়ি বা শিশু শিক্ষা কেন্দ্রগুলির সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে৷ এর পরের ধাপে রয়েছে মধ্যশিক্ষা৷ মধ্যশিক্ষায় আনা হয়েছে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টমকে৷ এরপরের ধাপে রয়েছে উচ্চশিক্ষা স্তর৷ সেকেন্ডারি স্তরে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিকে যুক্ত করা হয়েছে৷ ফলে মাধ্যমিক পরীক্ষার গুরুত্ব কার্যত হারাচ্ছে৷ কেন্দ্রের নয়া শিক্ষা ব্যবস্থায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত একসঙ্গে পঠন-পাঠন চলবে৷ ফলে, দশমের পরীক্ষার আর কোনও গুরুত্ব থাকছে না৷ একইসঙ্গে স্কুল শিক্ষায় ত্রিভাষা নীতি প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে৷ তিনটি ভাষা শেখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের৷ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সংস্কৃত ভাষাকে৷ উচ্চশিক্ষা ও স্কুল শিক্ষায় সংস্কৃত ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে৷
আরও পড়ুন- গুরুত্বহীন মাধ্যমিক, ৪ বছরে অনার্স, কলা-বিজ্ঞান মিশিয়ে নয়া শিক্ষানীতি কেন্দ্রের
প্রাক প্রাথমিকেও দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে৷ ৩ বছর পর্যন্ত গ্রেড-১, দু’বছরে গ্রেড-২৷ এর পর তিন বছর প্রস্তুতিমূলক স্তরের গ্রেড ধরা হয়েছে ৩,৪,৫ করে৷ পরের তিন বছরে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে গ্রেড ধরা হয়েছে ৬,৭ ও ৮৷ সবশেষে চার বছরের মাধ্যমিকস্তর৷ দেওয়া হয়েছে ৯,১০,১১ ও ১২৷ এভাবেই ৫+৩+৩+৪ পদ্ধতি চালু হচ্ছে৷ নতুন শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, স্কুলের আগে তিন বছরের প্রাক-স্কুল শিক্ষা রাখা হচ্ছে৷ ১০+২ স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার বদলে ৫+৩+৩+৪ ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে৷ তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি প্রস্তুতিপর্ব হিসাবে ধরা হয়েছে৷ ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি মাঝারি পর্বের শিক্ষা বলে ধরা হচ্ছে৷ নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি মাধ্যমিক শিক্ষা হিসাবে ধরা হচ্ছে৷
পাঠ্যক্রমে সামগ্রিক শিক্ষা, যুক্তিবাদী ভাবনা, সৃজনশীলতা, দলগত ভাবে কাজ, সামাজিক দায়বদ্ধতা, একাধিক ভাষা শিক্ষা ও ডিজিটাল শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ মূল্যায়ন পদ্ধতিতেও বদল আনা হয়েছে৷ পড়ুয়া নিজে নিজেকে মূল্যায়ন করতে পারবে৷ সহপাঠীরাও করবে মূল্যায়ন৷ পরে করবেন শিক্ষকরা৷ স্কুল স্তর থেকেই পড়ুয়ারা ভোকেশনাল বা কারিগরি শিক্ষা পাবেন৷ স্কুল থেকে মিলবে কারিগরি প্রশিক্ষণের সুযোগ৷