আজ বিকেল: আজকের দিনেই খবরের শিরোনাম হয়ে গেল সিউড়ির সরস্বতী শিশু মন্দির, সৌজন্য কৃতি ছাত্র অরিত্র মাহার। অভাব অনটনকে শক্তি হিসেবে নিয়েই দারিদ্র্যের সঙ্গে নিরন্তর যুঝে জ্যাকপট জিতে নিল এই কিশোর। আর জ্যাকপটের নাম মাধ্যমিকে ব়্যাংকিং। ৬৮১ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিকে আরও ১৪জনের সঙ্গে দশম স্থান অধিকার করেছে অরিত্র।
সারা বছর কেউ ফিরে না তাকালেও আজ মাহারা বাড়িতে উপচে পড়েছে প্রতিবেশীদের ভিড়। সবাই চাইছেন একবার অন্তত অরিত্রকে দেখবেন, আসছে শুভেচ্ছা। আনন্দে উত্তেজিত সরস্বতী শিশু মন্দিরের শিক্ষকরা। প্রিয় ছাত্র অরিত্রকে নিয়ে সেখানে উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে।
অরিত্র মাহারার বাবা ক্যাটারিং সংস্থার হয়ে অতিথিদের খাবার পরিবেশন করেন। যে দিন কাজ পান, সেদিন আয় হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। মা দিনভর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের টিউশন দেন সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে। এমন এক পরিবারে স্বাভাবিকভাবেই আর্থিক সঙ্কট চরমে। তারই মধ্যে শুধুমাত্র অধ্যবসায়ের জোরে দশের তালিকায় নিজের নাম তুলে আনতে পেরেছে অরিত্র। পাশে পেয়েছেন কাকা-জ্যাঠাদেরও। স্কুলের শিক্ষকরাও সাধ্যমতো বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত।
মাধ্যমিকের জন্য প্রস্তুতির চাপের মধ্যেও টিভিতে কার্টুন দেখার শখ ছাড়তে পারেনি সে। সঙ্গে চলেছে বন্ধুদের সাথে নিয়মিত ক্রিকেট খেলা। পড়াশুনা ছাড়াও ক্যুইজে আগ্রহী অরিত্র। জানায়, চার বন্ধুর গ্রুপ আছে তাদের। দলবদ্ধভাবেই নানান প্রান্তে ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তারা। আসে সাফল্যও। ছেলের এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাবা বিমল মাহারা ও মা চৈতি মাহারা। তাদের কথায়, ‘‘বহু কষ্ট করেই পড়াতে হয়েছে ছেলেকে। ভাল ফল করবে আশা ছিল। তবে রাজ্যে র্যাঙ্ক অপ্রত্যাশিত।’’ বড় হয়ে আইএএস হতে চায় অরিত্র, তবে দারিদ্র্য কতটা তার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত হতে দেবে, তানিয়েই চিন্তিত অভিভাবকরা।