আজ বিকেল: অনটন ইচ্ছেশক্তিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি তাইতো ফুটপাতের দোকানি মৈনাক আজ উচ্চমাধ্যমিকের সফল ছাত্র। ভাল ফলাফল করা ছাত্র, ইংরেজি সাহিত্যে এমএ করে শুধু জ্ঞান অর্জনই নয় পেটের ভাত জোগাড়ও করবে সে। আইএএস-এর মতো ক্লাস ওয়ান পরীক্ষায় সফল হয়ে বাবা-মা ও নিজের জীবনের মানচিত্রটাই বদলে দিতে চায় মৈনাক। না আর্থিক সহায়তার জন্য হাত পাতেনি তার পরিবার, সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাফল্যের মুখ দেখতে শুধু সহযোগিতা চায়। সঙ্গে থাকুক আশীর্বাদ ও অকুণ্ঠু ভালবাসা। মৈনাক এগোবে। তারই সহ্গে এগিয়ে যাবে গরীবের গ্রামীণ ভারত। জয় থাকবে সাধ্যের মধ্যেই।
কথায় আছে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। পড়াশুনো এগিয়ে নিয়ে যেতে বড় বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় অনেক ছাত্রছাত্রীকেই। পড়াশুনো বন্ধ করে দিতে আর্থিক অনটনের থেকে বড় বাধা নেই। পেটের দায় যে বড় দায়। পরিবারের দিকে তাকিয়ে রোজগারের পথে এগিয়ে যাওয়া ঠিক নাকি শিক্ষাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচা ঠিক, এই প্রশ্ন চিহ্ন অনেক ক্ষেত্রেই বিদ্যাবিমুখ করেছে ছাত্র-ছাত্রীদের। সেই চ্যালেঞ্জকে টেক্কা দিয়ে দেখাল কোচবিহারের গুয়াহাটি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নেহেরু নগরের স্থায়ী বাসিন্দা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মৈনাক সাহা।কোচবিহারের রামভোলা স্কুলের ছাত্র মৈনাক। উচ্চমাধ্যমিকে ৫০০ এর মধ্যে তার প্রাপ্ত নম্বর ৪২৩। কোচবিহারের কাছারি মোড়ে ফুটপাত ব্যবসায়ীর ছেলে আজ গোটা কোচবিহারের গর্ব। ফুটপাতের স্টেশনারি দোকান থেকে কিছু টাকা আয় নিয়ে কোন মতে দিন গুজরান। ভাড়াবাড়িতে থেকেও ছেলের পড়াশুনো চালিয়ে যেতে লড়াই করেছেন মা-বাবাও।
পড়াশোনার পাশাপাশি আবৃত্তি ছবি আঁকা এবং মূকাভিনয়তেও পারদর্শী মৈনাক। উচ্চমাধ্যমিকে সাফল্য লাভের পর মৈনাক চায় ইংরাজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনো করতে। আইএএস পরীক্ষা তার জীবনে পাখীর চোখ। উচ্চমাধ্যমিকে সাফল্যের জন্য মা-বাবার অক্লান্ত পরিশ্রমকে সে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। সময় পেলে দোকানের কাজে বাবাকে সাহায্যও করে মৈনাক। একদিকে আর্থিক অনটন অন্যদিকে আইএএস হওয়ার হাতছানি, চ্যালেঞ্জের সবচেয়ে বড় অধ্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে মৈনাক। অদম্য ইচ্ছেশক্তি আর অধ্যাবসায় সম্বল করে বাবা-মা-এর স্বপ্ন পূরণ করতে কিভাবে এগিয়ে যায় মৈনাক সেই দিকেই তাকিয়ে তার গোটা পরিবার।