চুঁচুড়া: পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের পাতে নুন-ভাত৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার প্রতিবাদে গান গাইতে গিয়ে বাউল শিল্পীকে তাড়াল স্কুল কর্তৃপক্ষ৷ আজ, সকালে এক বাউল শিল্পী স্কুলের পড়ুয়াদের পাতে নুন-ভাত দেওয়ার প্রতিবাদে হুগলী জেলার চুঁচুড়া বালিকা বিদ্যামন্দিরের বাইরে দাঁড়িয়ে গান গাইতে শুরু করেন৷ শিক্ষকদের সন্তানরা দুধে ভাতে থাকলেও কেন পড়ুয়ারা নুন-ভাত খাবেন? এই নিয়ে বাউল শিল্পী গান গাইতে শুরু করলে তীব্র প্রতিবাদ জানান স্কুলের শিক্ষকরা৷
অভিযোগ, বাউল শিল্পীকে ধাক্কা দিয়ে স্কুল চত্বর ছেড়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়৷ দোতারা নিয়েও টানাটানি করা হয়৷ ধাক্কা দিয়ে তাঁকে এলাকা ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হয় স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে৷ বাউল শিল্পীর অভিযোগ, তিনি গান গাইতে শুরু করতেই রে রে করে তেড়ে আসে স্কুল কর্তৃপক্ষ৷ গান থামিয়ে করা হয় হেনস্থা৷ যদিও, স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই বাউল শিল্পীর গানে স্কুলের পঠন-পাঠনে সমস্যা হওয়ায় বাউল শিল্পীকে চলে যেতে বলা হয়৷
সোমবার হুগলী জেলার চুঁচুড়া বালিকা বিদ্যামন্দিরের পড়ুয়াদের নুন-ভাত দেওয়ার অভিযোগ পান বিজেপি সাংসদ৷ নিজের লোকসভা কেন্দ্রের ওই বিদ্যালয়ে যান রেকেট চট্টোপাধ্যায়৷ স্কুলে হানা দিয়ে তিনি দেখেন ওই স্কুলের ছাত্রীদের দুপুরের খাবারে দেওয়া হয়েছে শুধু নুন-ভাত৷ এরপরই স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিজেপি সাংসদ৷ দেখতে চান স্কুলের নথি৷ এদিন স্কুলের নথিপত্র দেখে বেশ কিছু দুর্নীতির সন্ধান পান তিনি৷ ২৫ হাজার টাকার ডিম ও ২৭০ বস্তা চালের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেও অভিযোগ জানান বিজেপি সাংসদের৷ আজ, সোমবার স্কুলের খাদ্য তালিকায় সয়াবিন দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র নুন-ভাত৷ কিন্তু, কেন পড়ুয়াদের নুন-ভাত দেওয়া হল? জবাব দিতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ৷ গোটা ঘটনার পিছনে তৃণমূলকে দায়ী করেছেন বিজেপি সাংসদ৷ বিজেপি সাংসদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল৷ উল্টে শিক্ষা সংসদকে তদন্তের দাবিও জানিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব৷
এদিন সংবাদমাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা দুর্ভাগ্যজনক৷ কখনই মিড ডে মিলেরর মেনু বদল করা হবে না৷ আমি শিক্ষা দপ্তরকে বলব, বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে৷ কিন্তু, এভাবে কখনই পড়ুয়াদের নুন-ভাত দেওয়া উচিত নয়৷’’ এরপরই বিজেপি সাংসদকে বিঁধে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘‘টিভিতে দেখলাম পড়ুয়াদের নুন-ভাত দেওয়া হচ্ছে বলে বিজেপি নেত্রী ওই স্কুলে গিয়েছিলেন৷ বিজেপি সাংসদকে বলুন, মিড ডে মিলের টাকাটা যেন কেন্দ্র সঠিক সময়ে পাঠিয়ে দেন, তাহলে এই সমস্যা আর হয় না৷’’
এদিন বিজেপি সাংসদ বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার মিড ডে মিলের টাকা দিচ্ছে৷ আর এখানে পড়ুয়াদের নুন-ভাত দিয়ে টাকা চুরি করছে তৃণমূল৷ এরা পড়ুয়াদের মুখের খাবারও চুরি করছে৷ এরা কতবড় পাপী, তা না হলে এমন ভাবে কেউ চুরি করতে পারে৷’’ জানান, পড়ুয়াদের পাত থেকে খাবার চুরির বিষয়টি তিনি দিল্লি তুলে ধরবেন৷ একই সঙ্গে নিজের কেন্দ্রের স্কুলগুলিতে অভিযান চালাবেন, যাতে এই ধরনের দুর্নীতি না হয়৷