বিড়ি বেঁধেছে ফার্স্ট গার্ল, দিন মজুরি করেছে মেধাবী ছাত্র, স্কুল খুলতেই ক্লাসে ফিরছে ওরা

বিড়ি বেঁধেছে ফার্স্ট গার্ল, দিন মজুরি করেছে মেধাবী ছাত্র, স্কুল খুলতেই ক্লাসে ফিরছে ওরা

মুরারই:  লকডাউনে বন্ধ হয়েছিল স্কুলের পাঠ৷ বাড়িতে বসে পড়ানোর অর্থ জোগাতে পারেনি বাবা মা৷ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বই ফেলে বিড়ি বাঁধতে হয়েছিল ফার্স্ট গার্লকে৷ মধাবী ছাত্রকে করতে হয়েছে দিনমজুরের কাজ৷ এতদিন পর স্কুল খুলতেই ফের দু’চোখে ভিড় করেছে সোনালি স্বপ্ন৷ ফের ক্লাসরুমে হাজির ওরা৷ 

আরও পড়ুন- জম্মু-কাশ্মীরের সেনাকর্মীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ

পাইকর হাই মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী মমতাজ বেগম৷ ক্লাসের ফাস্ট গার্ল সে৷ কিন্তু লকডাউনে স্কুল বন্ধ হতেই ছেদ পড়েছিল পড়াশোনায়। তার বাবা দিনমজুরির কাজ করেন। করোনা পরিস্থিতিতে সেই কাজ বন্ধ হয়৷ খাবারই জুটত না ঠিক ভাবে , গৃহশিক্ষকের বেতন দেবেন কোথা থেকে? তাই বাধ্য হয়েই বিড়ি বাঁধা শেখেন মমতাজ। তাঁর আশা, স্কুল খোলায় আর বিড়ি বাঁধতে হবে না। মাধ্যমিকে সে ভাল ফল করার আশা রাখে বলেও জানালেন মমতাজ। 

মমতাজের মতো বিড়ি বাঁধতে হয়েছে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া জামনাতুন নাইমাকেও৷ মাধ্যমিকে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৭২৷ ইচ্ছা ছিল বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার৷ কিন্তু অর্থের অভাব সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি৷ তবে স্কুল খোলায় নতুন করে আশার আলো দেখছে সে৷ তাই ঠিক করেছে, আর বিড়ি বাঁধবে না৷ বরং পড়াশোনা করে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চায় জামনাতুন৷ 

বীরভূমের মুরারইয়ের দাতুড়া হাই মাদ্রাসার ছাত্র আয়ুব আলি মোল্লা দশম শ্রেণির ছাত্র। দশম শ্রেণিতে সপ্তম হয়েছিল সে৷  পরিবার পড়ার খরচ দিতে পারেনি৷ তাই বাধ্য হয়েই মাঠে কাজ করতে হয়েছে তাকে। মঙ্গলবার স্কুলে এসে দারুণ খুশি আয়ুব৷ সে জানায়, ধান পোঁতার কাজ করে কিছু রোজগার হত৷ সেটাই পরিবারের হাতে তুলে দিত। অনেক বন্ধুরা আবার নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেছে। তাঁর কথায়, ‘পড়াশোনা করতে চাই৷ তাই আবার স্কুলে এসেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *