Aajbikel

মাধ্যমিকে অঙ্কে ভয়? পরীক্ষার খাতায় কী ভাবে উত্তর লিখতে হবে? পুরো নম্বর পাওয়ার কৌশলই বা কী?

 | 
পড়ুয়া

কলকাতা: মাধ্যমিক৷ জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা৷ জোর কদমে চলছে প্রস্তুতি৷ বই থেকে মুখ সরানোর সময় নেই পরীক্ষার্থীদের সামনে৷ সব বিষয় প্রায় তৈরি৷ কিন্তু, এই সময় অঙ্ক নিয়ে বাড়তি ভয় কাজ করে অধিকাংশের মনেই৷ ফলে অঙ্কের উপর বিশেষ ভাবে জোর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে৷ অঙ্ক নিয়ে ভয় কাজ করলে সহজ অঙ্কও ভুল হয়ে যায়। ফলে নম্বর কাটা যায়। মাধ্যমিকে অঙ্ক প্রশ্নপত্রের কোন দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন, সেই বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন যোধপুর পার্ক বয়েজ বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের সহশিক্ষক কল্যাণরতন মান্না। 

আরও পড়ুন- দিনে শিক্ষক, রাতে কুলি! তিনি সেই গ্ল্যাডিয়েটর... যিনি মানবতাকেই সামনে রাখেন!

১ এর দাগের, ৬টি সঠিক উত্তর নির্বাচন করতে হয়। এখানে কোনও প্রশ্ন না ছাড়াই ভাল। সমাধান করতে না পারলেও, অনুমানের উপর একটি উত্তর লিখতে পারলে পঁচিশ শতাংশ সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উত্তর মিললে এখানে পুরো ১ নম্বর পাওয়া যায়।  রাফ ওয়ার্ক না থাকলেও হবে।

 
২ এর দাগের, শূন্যস্থান পূরণের ৬টির মধ্যে যে কোনও ৫টি করতে দেওয়া থাকে। কিন্তু এখানে সব ক’টির উত্তর দিতে পারলে ভাল। কারণ উত্তরের প্রথম দিকে যদি দু’-একটি ভুল হয়, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত সঠিক উত্তরের নম্বর গ্রহণ করা হয়।


৩ নম্বর দাগের, সত্য/মিথ্যা সব ক’টি উত্তর লেখা উচিত৷ নির্দিষ্ট প্রশ্নে সত্য/মিথ্যা-র উত্তর একবারই লিখতে হবে। দু’বার লিখলে প্রথম উত্তরটিই গ্রহণ করা হবে।


৪ নম্বর দাগের, বারোটি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন থাকে৷ প্রতিটির মান দুই৷ এখানে দশটি অঙ্ক করতে বলা থাকলেও বারোটিই করার চেষ্টা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কিন্তু পূর্ণমানের জন্য রাফ ওয়ার্ক/চিত্র থাকতেই হবে৷


৫ নম্বর দাগে থাকে ৫ নম্বরের পাটিগণিত৷ সেখানে দু’টি অঙ্কের মধ্যে একটি করতে হয়। সরল/চক্রবৃদ্ধি সুদ/সমহার বৃদ্ধি বা হ্রাসের অঙ্কে সঠিক সূত্র লেখার জন্য ১-২ নম্বর দেওয়া হয়।


৬ নম্বর দাগে, দু’টি ৩ নম্বরের দ্বিঘাত সমীকরণের মধ্যে একটি করতে বলা হয়ে থাকে। 


৭ নম্বর দাগে, একটি দ্বিঘাত করণী ও একটি ভেদ থেকে মোট দু’টি অঙ্কের মধ্যে একটি সমাধান করতে হয়। এখানে অশূন্য ভেদ ধ্রুবক না লিখলে ১ নম্বর কাটা যায়।


৮ নম্বর দাগে, অনুপাত ও সমানুপাত থেকে দু’টি প্রশ্ন থাকে৷ একটি করতে হয়। অশূন্য সমানুপাত ধ্রুবক না লেখার জন্য এখানে এক নম্বর কাটা যায়৷


৯ নম্বর দাগে, পাঁচ নম্বরের দুটি উপপাদ্যের মধ্যে একটি উপপাদ্য করতে বলা হয়। উপপাদ্য, উপপাদ্যের প্রয়োগ, উচ্চতা ও দূরত্বের অঙ্ক ঠিক হলেও ভুল ছবি বা ছবিহীন উত্তর দেওয়া হলে নম্বর শূন্য হয়ে যায়।


১০ নম্বর দাগে, দুটি তিন নম্বরের উপপাদ্যের প্রয়োগে নির্দিষ্ট নামকরণ দেওয়া থাকলে প্রদত্ত নাম দিয়েই ছবি ও প্রমাণ করতে হবে। এখানে দুটির মধ্যে একটি করতে বলা হয়৷ 

অঙ্ককে ভয় না পেরে ভালবেসে অভ্যাস করলে তা অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়৷ অঙ্কে ভাল নম্বর পেতেও কোনও সমস্যা হয় না। মনে রাখতে হবে মাধ্যমিকে ভাল ফলাফলের মূল কথাই হল গণিত৷ কী ভাবে অঙ্কের সূত্র মনে রাখা যায়? 


সরল সুদ, চক্রবৃদ্ধি সুদ, সমহার বৃদ্ধি/ হ্রাস, গড়, মধ্যমা, সংখ্যাগুরুমান নির্ণয়ের সূত্রগুলো অঙ্কের মধ্যে ব্যবহার করে বারে বারে অনুশীলন করলে সহজেই মনে রাখা যাবে। এবার দেখা যাক কী ভাবে অঙ্কে পূর্ণ নম্বর পাওয়া সম্ভব-


• কিছু বিষয়ের উপর নজর রাখতে পারলেই গণিতে একশো শতাংশ নম্বর পাওয়া কঠিন হবে না৷ টেস্ট পেপার থেকে বেশি করে অঙ্ক অভ্যাস করা দরকার। 


• উত্তরপত্রে কোনও অঙ্ক পুরোটা শেষ করতে না করতে পারলেও আংশিক নম্বর পাওয়া সম্ভব। তাই কোনও অঙ্ক শেষ না হলেও, যতটা কষা হয়েছে ততটাই রেখে দেওয়া উচিত। সেই অঙ্কে আটকে না থেকে পরের অঙ্কে চলে যেতে হবে।

• প্রশ্নপত্রে কোনও বিশেষ পদ্ধতির উল্লেখ না থাকলে যুক্তিপূর্ণ যে কোনও পদ্ধতিতেই অঙ্ক কষা যায়। পাটিগণিতের অঙ্ক বীজগাণিতিক পদ্ধতিতেও করা যেতে পারে৷ 

• প্রতিটি সমাধানের শেষে উত্তর অবশ্যই লিখবে। প্রয়োজনীয় একক থাকলে একক সহ উত্তর লেখা আবশ্যিক৷

•    উত্তরপত্রে প্রতিটি স্তরে ‘=’ বা, ‘অথবা’ এর যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। এই চিহ্নগুলি লেখা না হলে বা উল্টো লিখলে এক নম্বর কেটে নেওয়া হবে।

•     উপপাদ্য সর্বদা বামদিকের পাতা থেকেই শুরু করা ভালো৷ যাতে প্রমাণ লেখার জন্য পাতা ওল্টাতে না হয়। উপপাদ্য ছবি মিলিয়ে বারে বারে লিখে অনুশীলন করতে হবে।

•     রাফ ওয়ার্ক থাকবে খাতার ডানদিকে৷  সেখানে লাইন টেনে নিয়ে রাফ করতে হবে।

•     অঙ্কের দাগের ক্রমানুসারে উত্তর করতে বলা হলেও যে অঙ্ক সহজ মনে হবে, সেই অঙ্ক দাগ নম্বর-সহ আগে করে নেওয়াই ভাল। তবে কোনও একটি দাগের সবক’টি প্রশ্নের উত্তর একসঙ্গে করলে পারলে ভাল৷ 

•     অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নের উত্তর সম্পূর্ণ বাক্যে না দিয়ে কেবলমাত্র সঠিক উত্তর লিখলেই চলবে৷

•     খাতায় অজ্ঞাত রাশি সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ করতে হবে। পরীক্ষার আগে সহজপাচ্য খেলেই ভাল। রাত না জেগে সারা দিব পড়াশোনা করলেই শরীর ভালো থাকবে৷ বিশেষত গণিত পরীক্ষার আগের রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে৷ 
 

Around The Web

Trending News

You May like