কলকাতা: এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে।গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার সাতটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রই ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপে-মোবাইলে ঘুরেছিল প্রশ্নপত্রের ছবি। এবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতেই রাজ্যের ৪২টি ব্লকে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত।
পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গতবছর যে যে ব্লকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল, এবং সেই প্রবণতা দেখা গিয়েছিল, সেই রকম ৪২টি ব্লকে দু’ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হবে। বেলা ১২টা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে ইন্টারনেট পরিষেবা।
এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য বিশেষ বিধি চালু করেছে পর্ষদ। ছাত্রছাত্রীরা তো বটেই, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ক্লাস ঘরে মোবাইল ফোন নিয়ে যেতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে।
তবে এই বজ্র আঁটুনিতেও প্রশ্নফাঁস ঠেকানো যাবে কিনা তা নিয়ে পর্ষদের আধিকারিকদের একাংশের মধ্যেই প্রশ্ন রয়েছে। তাদের মতে একশ্রেণীর পরীক্ষার্থী ও কর্তা ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়ম ভাঙাটাই ইদানিং দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের পিছনে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। বলাই বাহুল্য শাসক শিবিরের নেতা নেত্রীদের বিরুদ্ধেই এধরনের সিংহ ভাগ অভিযোগ। কাজেই ইন্টারনেট বন্ধ বা ফোন ব্যবহারে বিধিনিষেধ কতটা কার্যকরী হবে তা নিয়ে তারা দস্তুর মত সংশয়ে।
এবছর মাধ্যমিকে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০লক্ষ ১৫হাজার ৮৮৮জন। গতবছর এই সংখ্যা ছিল ১০লক্ষ ৪৯হাজার ৫১৩। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৩৩হাজার কমেছে। এই সংখ্যা ক্রমশ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে পর্ষদ সভাপতির দাবি, প্রতিবছর পাশের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। গত ২০১৬সাল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পর্ষদ সভাপতি আরো বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবছরও পরীক্ষা শুরুর প্রায় ১৫মিনিট আগেই পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র হাতে পাবেন। পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন, স্মার্ট ঘড়ি, ক্যালকুলেটর ও ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা যাতে সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারে এবং পরীক্ষা চলাকালীন কোন পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা অভিযোগ জানাতে পর্ষদে একটি বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। এই কন্ট্রোলরুমের নম্বর হলো (০৩৩) ২৩৫৯-২২৬৪ এবং (০৩৩) ২৩৫৯-২২৭৪। পর্ষদের অধীন প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকেরা এই নম্বরে ফোন করতে পারবেন। তবে পরীক্ষার সময় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কল্যাণময়বাবু তার উত্তর দিতে অস্বীকার করেন।
এদিকে টালা ব্রিজ বন্ধ থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার পরীক্ষার্থীদের জন্য তাদের সুবিধা অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচন করা হয়েছে। পর্ষদ সভাপতি জানান, সেতুর ওপারে যেসব ছাত্রছাত্রী রয়েছে তাদের ওই এলাকাতেই এবং এপারের পরীক্ষার্থীদের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচন করা হয়েছে। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হবে না ।
রেকর্ড হারে কমল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, নয়া যুক্তি পর্ষদ সভাপতি
রেকর্ড হারে কমল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, নয়া যুক্তি পর্ষদ সভাপতি