কেরালা: “ইউ কান্ট ব্রাইব দ্য ডোর অন ইওর ওয়ে টু দ্য স্কাই”, জনপ্রিয় ব্রিটিশ সঙ্গীতশিল্পীর গানের এই দুই কলি জীবনের পথে অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হতে দেখা গেছে বারবার। অর্থাৎ, সাফল্যের শিখরে ওঠার পথে কোনোরকম ঘুষ বা শর্টকাট চলে না, জীবনযুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে চোখে চোখ রেখে এগিয়ে যাওয়াই একমাত্র চাবিকাঠি। একাগ্রতা আর অদম্য হার না মানা জেদের এই পথেই সাফল্য এসেছে আইএএস (IAS) অঞ্জলির জীবনেও।
ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস। ভারতবর্ষের মেধাবী পড়ুয়াদের বেশিরভাগই স্বপ্ন দেখে এই একটি পরীক্ষায় পাশ করার। নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তবে আইএএসের পথে মেলে সাফল্য। আইএএস অফিসার হয়ে সাফল্যের শিখরে ওঠার স্বপ্ন লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার মতোই দেখেছিলেন কেরালার অঞ্জলিও। কিন্তু পথটা মসৃণ হয়নি একেবারেই। পর পর দুবার চূড়ান্ত ব্যর্থতায় ঝুঁকে পড়েছিল অঞ্জলির মাথা। একের পর এক বন্ধ হয়েছিল স্বপ্নের দরজা।
কিন্তু কথায় বলে ব্যর্থতাই সাফল্যের অন্যতম ইঙ্গিত। ব্যর্থতার পথ ধরেই যদি বিভ্রান্ত না হয়ে লক্ষ্যে অবিচল থাকা যায়, তবে কোনো এক ফাঁক দিয়ে ঠিক ঢুকে পড়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। কেরালার অঞ্জলির জীবনও আরো একবার প্রমাণ করে দিয়েছে এই অমোঘ সত্য। পরপর দু’বার অঞ্জলি আইএএস পরীক্ষার প্রি পর্যায়েও কোয়ালিফাই করতে পারেননি। কিন্তু ব্যর্থতায় ভেঙে না পড়ে মনের জোরে তৃতীয় বারের জন্য বসেছিলেন পরীক্ষায়। এবার আর মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারেননি ভাগ্যদেবী। ভারতের কঠিনতম পরীক্ষা গুলির মধ্যে অন্যতম এই ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের পরীক্ষায় তৃতীয় বারের চেষ্টায় টপার হন অঞ্জলি।ক্রমতালিকায় ২৬ নম্বরে জ্বলজ্বল করতে দেখা যায় তাঁর নাম। ২০১৭ সালে এই সাফল্যের পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
চাকরি করতে করতেই আইএএস অফিসারের পরীক্ষায় বসেছিলেন অঞ্জলি। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য চাকরি ছাড়ার কথা কখনো ভাবেননি বলেই জানিয়েছেন তিনি। তিন-চার বছর ধরে চলেছে প্রস্তুতি-পর্ব। মনের জোর থাকলে জীবনে যা প্রাপ্য তা যে কেউ আটকে রাখতে পারে না তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত কেরালার অঞ্জলির জীবন।