জরুরি ভিত্তিতে চালু ১০০০ সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল

জরুরি ভিত্তিতে চালু ১০০০ সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল

বেঙ্গালুরু: মাতৃভাষাকে পিছনে ফেলে ক্রমেই বাড়ছে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার চাহিদা৷ অভিভাবকদের চিন্তাধারাতেও আসছে পরিবর্তন৷ তাঁরাও চাইছেন যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে৷ ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে পড়ুক তাঁদের সন্তানরা৷

কর্ণাটকে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি হওয়ার ঝোঁক ছিল চোখে পড়ার মতো৷ রাজ্যের উদুপি জেলার ব্রহ্মবরের গভর্নমেন্ট বোর্ড স্কুলের প্রিন্সিপল মাল্লিকার্জুন বলেন, ‘‘গত বছর আমার ঘোষণা করেছিলাম প্রথম শ্রেণি থেকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য নতুন বিভাগ শুরু হবে৷ এই ঘোষণা রীতিমতো সাড়া ফেলেছিল অভিভাবকদের মধ্যে৷ জমা পড়েছিল কয়েকশো ফর্ম৷’’ তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ অভিভাবকরাই চাইছেন তাঁদের ছেলে-মেয়েকে ইংলিশ মিডিয়াম সেকসনে ভর্তি করতে৷ চাহিদা মেটাতেই আরও ৬০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য দ্বিতীয় বিভাগটি খোলা হয়েছে৷ তবে কিছুটা আক্ষেপের সুরেই মল্লিকার্জুন জানান, স্কুলে ক্লাসরুমের অভাব রয়েছে৷ তাই আগামী শিক্ষাবর্ষে দুটি বিভাগ চালু করার সম্ভব হবে না৷

গভর্নমেন্ট বোর্ড স্কুলের মতোই কর্ণাটকে আরও ১০০০টি সরকারি স্কুলে জরুরি ভিত্তিতে প্রথম শ্রেণি থেকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা চালু করা হয়েছে৷ ২০১৯ সালে রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন এইচডি দেবেগৌড়া নেতৃত্বাধীন জোট সরকার৷ গত জুন মাসে কর্ণাটকে ক্ষমতায় আসে বিজেপি৷ কিন্তু দেবেগৌড়া সরকারের এই প্রকল্প বন্ধ করা হয়নি৷ বরং উৎসাহের সঙ্গেই এই প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে৷

দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ স্কুলেই কন্নাড়া মাধ্যমকে রীতিমতো পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে ইংরেজি মাধ্যমের চাহিদা৷ কর্ণাটকে বিপুল সাড়া ফেলেছে সরকারের এই পাইলট প্রকল্প৷ কিন্তু এই পদক্ষেপও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন৷ ইংরেজি মাধ্যমে যে ভাবে ছাত্র সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তা সামাল দেওয়ার মতো শিক্ষক নেই রাজ্যে৷ পাশাপাশি এই প্রকল্পের বিরোধিতায় সরব কট্টর কন্নড়পন্থীরা৷ তাঁরা মনে করছেন, ছেলেমেয়েরা ইংরেজি মাধ্যমের দিকে ঝুঁকলে মাতৃভাষার উপর দখল হারাবে৷

দিল্লি, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল এবং তামিলনাড়ু সরকার আগেই সরকারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো শুরু করে দিয়েছে৷ তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই রাজ্যের স্কুলগুলিতে ইংরেজি মাধ্যম চালু করেছে কর্ণাটক সরকার৷ ব্যাপক সাড়াও মিলেছে৷ তবে অভাব শুধু পর্যাপ্ত শিক্ষকের৷ মল্লিকার্জুন বলেন, রাইট টু এডুকেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী, প্রতি ৩০ জন ছাত্র পিছু ১ জন শিক্ষক থাকার কথা৷ কিন্তু চাপ সামলাতে একটি সেকশনে ৬০ জন ছাত্র ভর্তি করা হচ্ছে৷ যা ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাতের ভারসাম্য নষ্ট করছে৷ এই পরিস্থিতিতে অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করার কথাও ভাবছে স্কুলগুলি৷

২০১৯ সালে এই প্রকল্প চালু করার পরই গ্রীষ্মের ছুটিতে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়৷ প্রায় ১৬০০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷  তবে নতুন করে ইংরেজি মাধ্যমের জন্য কোনও শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি৷ ফলে শিক্ষক সমস্যা রয়েই গিয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 + 6 =