নয়াদিল্লি: ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে একাধিক মহল থেকে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসেই নেওয়া হবে এবছরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স ও নিট পরীক্ষা। তাঁর আগে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মতোই আজ (২৫ আগস্ট, মঙ্গলবার বার) পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন প্রকাশ করল ন্যশনাল টেস্টিং এজেন্সি।
অন্যদিকে জয়েন্ট ও নিট পরীক্ষা স্থগিত করার আবেদন জানিয়ে দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেপ্টেম্বরের শুরুতে পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে দ্বিতীয়বার চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর৷ ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি থেকে রাজ্য সরকারকে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে৷ চিঠির কথা উল্লেখ করে ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন মমতা৷ করোনা আবহে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি৷ নির্দেশ পুনর্বিবেচনায় সুপ্রিম কোর্টের কাছেও আবেদন করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে ফের চিঠি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি নিট ও জয়েন্ট পরীক্ষা স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছেন পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছেন সুইডিশ পরিবেশকর্মী৷ মহামারীর মধ্যে পরীক্ষা বসতে বলা চূড়ান্ত অনৈতিক৷ ভারত সরকার এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষায় বসতে বলছে৷ করোনার মধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ যখন বন্যা কবলিত, তার মধ্যে এই পরীক্ষায় বসতে বলা মানে অনৈতিক বলেও দাবি করেছেন তিনি৷
অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠি হতে চলা দুটি পরীক্ষার জন্য এনটিএর অ্যাডমিট কার্ড জারি করার পরেই এই নতুন নির্দেশিকা জারি করা হল। পরীক্ষার দিন প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের জন্য বাধ্যতামূলক এমন একাধিক নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থা সম্পর্কে গাইডলাইন প্রণয়নের জন্য বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে এদিনের এই নির্দেশিকায়।
নির্দেশাবলীর মধ্যে রয়েছে-
পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক। তবে বাড়ি থেকে পড়ে যাওয়া মাস্ক পড়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশপত্রের অনুমতি দেওয়া হবেনা। সেটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে সরবরাহ করা নতুন একটি ত্রিস্তরীয় মাস্ক পড়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।
যদিও পরীক্ষা দেওয়ার সময় ফেস মাস্ক এবং হ্যান্ড গ্লাভস পরার দরকার নেই।
প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে নিজের জলের বোতল এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
পরীক্ষার্থী এবং ইনভিজিলেটরের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। পরীক্ষার্থীদেরও সবসময় একে অপরের থেকে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে। এক্ষেত্রে কারো দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি (৯৯.৪ ডিগ্রির উপরে) থাকলে তাঁদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আলাদা ঘরে বসানো হবে।
কারো তাপমাত্রা খুব বেশি থাকলে বা করোনার উপসর্গ থাকলেও তাদের পরীক্ষায় লেখার অনুমতি দেওয়া হবে।
পরীক্ষার্থীদের একসঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর ফলে সৃষ্ট ভিড় এড়াতে তাদের পৃথক পৃথক রিপোর্টিং টাইম দেওয়া হবে।
করোনা সংক্রমণ এড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ হিসেবে পরীক্ষার্থীদের ইনভিজিলেটরের সামনে একটি সেল্ফ ডিক্লেয়ারেশন ফর্ম পূরণ করে স্বাক্ষর করতে হবে। যেখানে উল্লেখ থাকবে যে তাঁদের কোনও কোভিড জাতীয় লক্ষণ নেই এবং সাম্প্রতিক অতীতে করোনা পজিটিভ বা কোনও লক্ষণ রয়েছে এমন কারও সংস্পর্শে আসেননি।
পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রের কর্মীদের দ্বারা প্রদত্ত নির্দেশাবলী কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
করোনা সতর্কতা বিধি অবলম্বন না করলে সেই পরীক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবেনা।