ডেবরা: শুধু অধিকারবোধ নয়, সমাজের প্রতি আমাদের কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়ে বিদ্যাসাগরের প্রতি প্রকৃত সম্মান জানানো সম্ভব৷ ডেবরায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর দ্বি-শততম জন্মবর্ষ উদযাপনে গিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ডক্টর মহীদাস ভট্টাচার্য৷
আজ ডেবরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর দ্বিশততম জন্মবর্ষ উদযাপন কমিটির তরফে বিদ্যাসাগরের জন্মবর্ষ উদযাপন করা হয়৷ এদিন সকালে ডেবরা বাজার থেকে ডেবরা অডিটোরিয়াম পর্যন্ত প্রভাত ফেরিও করা হয়৷ এরপর অডিটোরিয়াম হলে বিদ্যাসাগরের জীবনের নানান দিক ও বর্তমানে তাঁর জীবন চর্চার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডক্টর মহীদাস ভট্টাচার্য৷ উপস্থিত ছিলেন ডেবরা বিধানসভার বিধায়ক সেলিমা খাতুন, অধ্যক্ষ মোহিনীমোহন মাইতি, ডেবরা সারস্বত বিদ্যামন্দিরের বিদ্যামন্দিরের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার দাস ও পুলিনবিহারী পইড়া সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, অভিভাবিকরা৷
অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান বক্তা বিশিষ্ট অধ্যাপক ডক্টর মহীদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যেভাবে সারাজীবন সমাজের জন্য, শিক্ষার জন্য, গোঁড়ামি-কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গড়ে তোলার জন্য জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করে গেছেন তা থেকে আমাদের শিক্ষা নিয়ে আমাদের নিজেদের এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যে তাকে সঞ্চারিত করতে হবে। একদিন নয়, প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। সমাজ থেকে আমরা নিচ্ছি অনেক, কিন্তু দিচ্ছি কতটুকু? কেবল অধিকারবোধ নয়, সমাজের প্রতি আমাদের কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়ে বিদ্যাসাগরের প্রতি প্রকৃত সম্মান জানানো সম্ভব৷’’
সভায় কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বালিচক অথবা ডেবরা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একটি মূর্তি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এবং সদ্য শুরু হওয়া বালিচক উড়ালপুল নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর সেই উড়ালপুলের নাম ‘বিদ্যাসাগর উড়ালপুল’ নামকরণের জন্য প্রশাসন এবং সরকারের কাছে আবেদন জানানো হবে৷
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর দ্বি-শততম জন্মবর্ষ উদযাপন কমিটির সভাপতি সুনীল কুমার দাস বলেন, “আজ আমাদের কমিটির উদ্যোগে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের দ্বি-শততম জন্মবর্ষ উদযাপনের শুভ সূচনা হল। সারা বছর ধরে চলবে আমাদের উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি।
ডেবরা বিধানসভার বিধায়ক সেলিমা খাতুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিদ্যাসাগরের জীবন চর্চার প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ করে বালিচক-ডেবরা এলাকায় বিদ্যাসাগরের একটি মূর্তি স্থাপনের জন্য এবং বালিচক উড়ালপুল নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হলে সেই উড়ালপুলটির নাম ‘বিদ্যাসাগর উড়ালপুল’ নামকরণের জন্য কমিটি যে প্রস্তাব রেখেছে তা গুরুত্ব সহকারে যথাযথ জায়গায় তুলে ধরার আশ্বাস দেন।