নয়াদিল্লি: ছবি ১: সন্তান মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। বাবা-মায়ের ঘুম নেই। ছুটি নিয়ে পরীক্ষা সেন্টারে তাঁদের অধীর অপেক্ষা। সন্তানের হাসি মুখ দেখার অপেক্ষা। তারপর ফল বেড়ানো আগে বাবা-মায়ের উৎকণ্ঠার শেষ নেই।
ছবি ২ : উচ্চমাধ্যমিকের হার্ডল পেড়োলে আরো চাপ বাবা-মায়েদের। জয়েন্টের প্রস্তুতি নিয়ে বাবা-মারাই যেন নিষ্ঠাবান পড়ুয়া। জেনারেল লাইন হলে সাবজেক্ট বাছতে বাবা-মায়েদের ঘুম পালিয়ে যাওয়ার জোগার। – এছবি সারা ভারতের।
ছেলেমেয়েদর পড়াশুনোয় বাবা-মায়েদের উৎসাহ তুঙ্গে। আর এখানেই ভারত এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে। ছেলে-মেয়েদর কেরিয়ার তৈরি করে দিতে বাবা-মায়েদের অবদান নিয়ে এক সমীক্ষা দেখাচ্ছে, এব্যাপারে ভারত বিশ্বের অন্যান্য় দেশকে টপকে গেছে। সমীক্ষা যা বলছে, তাতে আহ্লাদিত হতেই পাড়েন বাবা-মায়েরা। ভারতে বাবা-মায়েরা সপ্তাহে অন্তত ১২ ঘণ্টা ব্যায় করেন সন্তানের পড়াশুনোয়।
ভারকে ফাউন্ডেশনের একটি রিপোর্ট বলছে, অপেক্ষাকৃত কম আয়ের বাবা-মায়েরা বেশি যত্নবান তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনোয়। উচ্চ আয়ের বাবা-মায়েরা অনেক সময় সরাসরি ছেলে মেয়ের পড়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন না, তাঁদের নিজেদের পেশাদারিত্বের জন্য়। তবে তাঁরা অন্যভাবে সহায়তা করেন সন্তানের পড়ায়। নামী টিউটার রেখে দেন। টাকা দিয়ে ভালো কোচিংয়ে পাঠান- এই সব। সমীক্ষা বলছে, এশিয়ার বেশিরভাগ গৃহস্থ তাদের আয়ের ১৫ শতাংশ ব্যয় করে সন্তানের সাপ্লিমেন্টাল এডুকেশনের জন্য।
ভারতের পরেই রয়েছে ভিয়েতনামের স্থান। সমীক্ষা বলছে, ভিয়েতনামে বাবা-মায়েরা সপ্তাহে ১০.২ ঘণ্টা ব্যয় করে সন্তানের পড়ায়। তৃতীয় স্থানে ইন্দোনেশিয়া। এখানকার বাবা-মায়ের সপ্তাহে ৮.৬ ঘণ্টা ব্যায় করে সন্তানের পড়ায়। এব্যাপারে চিন ষষ্ঠ স্থানে। প্রতিবেশী এই রাষ্ট্র বিভিন্ন বিষয়ে ভারতে টেক্কা দিয়েছে বিভিন্ন সময়। কিন্তু ছেলেমেয়েদের পড়াশুনোয় বাবা-মায়ের নিষ্ঠায় ভারতে তারা টেক্কা দিতে পারেনি। অনেক পেছনে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া।
ভারতে চাকরির সমস্যা আছে। বেকারত্ব এই মুহূর্তে সারা দেশে একটা জ্বলন্ত ইস্যু। এই অবস্থায় ছাত্রদের পড়ায় নিবিষ্ট না হয়ে উপায় কী! বাবা-মায়েরা দিন রাত এক করে দিচ্ছেন সন্তানের কেরিয়ারে। এমনকী অনেক পরিবার নিজের সঞ্চয় ভেঙেও সন্তানের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করে। এতে শিক্ষার হার বাড়ছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক। কিন্তু সেভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ যদি তৈরি না হয়, তাহলে অর্থ ও শ্রম সবই শেষপর্যন্ত পণ্ড।