কলকাতা: করোনার জেরে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই স্কুল কলেজের গেটে তালা ঝুলেছিল। যদিও কেন্দ্র তরফে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খোলার কথা বলা হয়েছে। যাইহোক, দীর্ঘ ৫ মাস অফলাইনের বদলে অনলাইন প্রযুক্তিকেই ব্যবহার করে পড়াশোনা করানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে দুটি প্রশ্ন উঠেছিল প্রথমেই। এক, যাদের কাছে কম্পিউটার বা ওই জাতীয় কোনও ডিভাইস নেই তারা পড়বে কিভাবে এবং দুই, ইন্টারনেট স্পিড। প্রথম সমস্যার সমাধান কিছুটা করা গেলেও ইন্টারনেটের স্পিড নিয়ে কোনও পদক্ষেপ এখনও নেওয়া হয়নি। এবার সেই ব্যপারে পদক্ষেপ নিল খড়গপুর আইআইটি।
খড়গপুর আইআইটি ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেট্রিক্যাল কমিউনিকেশনের বিভাগের কিছু গবেষক একটি বিশেষ প্রযুক্তি-নির্ভর সফটওয়্যার তৈরি করেছেন। যেখানে কোনও ছাত্রের ইন্টারনেট স্পিড কম থাকলেও এই বিশেষ প্রযুক্তির সহায়তায় অনলাইনে ক্লাস করতে তাঁর কোনও সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান। সেক্ষেত্রে শিক্ষকের ইন্টারনেট স্পিড ঠিক থাকলেই চলবে। প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় অধ্যাপক রাজা দত্ত ও তাঁর স্নাতকোত্তর ছাত্রছাত্রীরা মিলে এই কাজটি করেছেন। এই বিশেষ প্রযুক্তির কপিরাইটের আবেদন করা হয়েছে সংশ্লিষ্ঠ মহলে। এর নাম রাখা হয়েছে ‘দীক্ষক’।
অধ্যাপক রাজা দত্ত জানিয়েছেন, এখন যে সব অ্যাপ বা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইন ক্লাসগুলি করা হচ্ছে, সেগুলি মূলত অনলাইন মিটিং অ্যাপ। এই অ্যাপগুলিতে যাতে সবাই কথা বলতে পারেন পাশাপাশি শেয়ার করতে পারেন সেই ভাবেই তৈরি করা হয়েছে। যাকে প্রযুক্তিগত ভাষায় বলা হয়, অল পার্টি কমিউনিকেশন। এক্ষেত্রে হাইস্পিড ইন্টারনেট প্রয়োজন হয়। কিন্তু ‘দীক্ষক’ এক্ষেত্রে একমুখী ট্রান্সমিশন। এখানে শিক্ষককেই যাবতীয় সুবিধে দেওয়া হবে। ওয়ান ওয়ে ট্র্যাফিকের মতো এরও গতি হবে একমুখী। তাই ইন্টারনেট স্পিড পড়ুয়াদের সকলের সমান না হলেও চলবে। পাশাপাশি দীক্ষকে সাইবার নিরাপত্তার দিকটিও নজরে আনা হয়েছে।
এই নয়া সিস্টেমে একটি হ্যান্ড রেইজ টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের পাশাপাশি পড়ুয়াদের কিছু প্রশ্ন বা বলার থাকলে সেখানে ক্লিক করবে পড়ুয়ারা। শিক্ষককে সেখানে অনুমোদন দিতে হবে। এই ভাবেই চলবে টিচিং-লার্নিং প্রসেস। ইতিমধ্যেই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্লাস নিচ্ছে খড়গপুর আইআইটি।