কলকাতা: চলতি বছরে উচ্চমাধ্যমিকে বিভিন্ন জেলায় অনেক পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় বিদ্যালয় শিক্ষা দফতর উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে। দফতরের আধিকারিকরা গতকাল রাতে এই নিয়ে দীর্ঘ সময় ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। পরে সংসদের মূল্যায়ন ব্যবস্থায় কোনও গাফিলতি ছিল কি না অথবা সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলি পরীক্ষার্থীদের নম্বর পাঠাতে ভুল করেছে কি না সংসদ সভাপতিকে সেই বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখতে বলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ রিপোর্টে মূল্যায়নের সঙ্গে স্কুলগুলির পাঠানো পরীক্ষার্থীদের নম্বর জমা দিতে বলা হয়েছে৷ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় গতকাল রাজ্যের বিভিন্ন জেলার স্কুলে অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান৷
কোথাও ৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭২ জন পড়ুয়া অকৃতকার্য হয়েছে। কোথাও আবার ১২০ জন ছাত্রীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ১০ জন। ফল নিয়ে অসন্তুষ্ট পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ জেলায় জেলায়। ‘পরীক্ষাই হয়নি। তবে কেন আমাদের ফেল করানো হল?’ শুক্রবার পাশের দাবিতে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন স্কুলে বিক্ষোভে সামিল হল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্র ছাত্রীরা। জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলা বালিকা বিদ্যালয়ে গেট আটকে স্কুল চত্বরে চলে বিক্ষোভ। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, যে সকল ছাত্রীদের সন্দেহ রয়েছে তাঁদের কেন নম্বর কম এলো। তা জানতে স্ক্রুটিনির ব্যবস্থা রয়েছে।
ছাত্রীদের অভিযোগ, স্কুল থেকে তাদের প্রোজেক্ট রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়নি। এই কারণে তারা কম নম্বর পেয়েছে। ছাত্রীদের আরও অভিযোগ পরীক্ষায় বসতে চাইলেও প্রধান শিক্ষিকা তাদের পর্ষদ দফতরে যোগাযোগ করতে বলছেন বলে দাবি। এছাড়াও, ধূপগুড়ি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। দীর্ঘক্ষণ প্রধান শিক্ষকের ঘরে চলে বিক্ষোভ। স্কুল থেকেই নম্বর কম পাঠানো হয়েছে বলে দাবি স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের। একাদশ শ্রেণিতে নম্বর কম দেওয়ার ফলেই এই রেজাল্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করে ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকরা মিলে বিক্ষোভ দেখায়।পরবর্তীতে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন ধূপগুড়ি থানার আইসি সুজয় তুঙ্গা সহ পুলিশ বাহিনী। স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সহ আইসির উপস্থিতিতে বৈঠকে বসা হয়।
এবছর মাধ্যমিকে শান্তিপুরের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে এই বাগআঁচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া। কিন্তু এই বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭২ জন পড়ুয়া অকৃতকার্য হয়েছে। এত সংখ্যক অকৃতকার্যের ঘটনা বিগত দিনে স্কুলের ইতিহাসে নেই। যখন রাজ্যজুড়ে পাশের হার ৯৭ শতাংশের ঊর্ধ্বে সেখানে একটি মাত্র স্কুলে ৭২ জন পড়ুয়া কী ভাবে অকৃতকার্য হল, এই নিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেবিক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর উচ্চমাধ্যমিকেও ১০০ শতাংশ পাশের আশা করেছিলেন পড়ুয়ারা। কিন্তু তেমনটা হয়নি। বিকল্প মূল্যায়ণ পদ্ধতিতেও বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরতে পারেনি।কিন্তু সেই ফলাফল আশানুরূপ না হওয়ায় শুক্রবার থেকে পথ অবরোধে নেমেছে ছাত্র-ছাত্রীরা।