করোনা পরবর্তী সময়ে কী ভাবে চলবে শিক্ষা ব্যবস্থা, চ্যালেঞ্জের মুখে দেশ

করোনা পরবর্তী সময়ে কী ভাবে চলবে শিক্ষা ব্যবস্থা, চ্যালেঞ্জের মুখে দেশ

নয়াদিল্লি:  কোভিড-১৯ সংক্রমণ রুখতে বিশ্বজুড়ে জারি লডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৭০ শতাংশ পড়ুয়া৷ লকডাউনে টানা স্কুল ছুটির জেরে ভারতের প্রি-প্রাইমারি, প্রাইমারি, সেকেন্ডারির প্রায় ৩২ লক্ষ শিক্ষার্থী প্রভাবিত হয়েছে৷ ছেদ পড়ছে তাদের পড়াশোনায়৷ এই কঠিন পরিস্থিতিতে বহু পড়ুয়াই নাম লেখাতে চলেছে স্কুলছুটের দলে৷ বাড়বে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা৷ এছাড়াও শিশু হিংসার ঘটনা প্রবলভাবে বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিশুদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়বে৷ এই পরিকাঠামোয় অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়বে হাজার হাজার নাবালিকা৷ 

অন্যদিকে, ব্ল্যাকবোর্ড-চক ছেড়ে ই-লার্নিং মডেলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার লড়াই চালাচ্ছেন শিক্ষকরাও৷ অনলাইন পাঠের পরিকল্পনা তৈরি করে তা আপলোড করতে হচ্ছে তাঁদের৷ বাড়ি থেকে ওয়ার্ক ফ্রম হোম এবং অনলাইন টিচিং তাঁদের মানসিক ভাবেই বিপর্যস্ত করে তুলছে৷ 

UDISE –র তথ্য বলছে, ভারতে প্রায় ১৫ লক্ষ স্কুল, ২৫ কোটি পড়ুয়া এবং স্কুল স্তরে ৯৪ লক্ষ শিক্ষক আছেন৷ এছাড়াও ৫০ হাজার উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ দেশে৷ তবে ক্লাসঘর ছেড়ে অনলাইন শিক্ষার জোয়ারে নানাবিধ সমস্যায় পড়েছে স্কুলগুলি৷ 

এই বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ করেছে সরকার?
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশন (ইউজিসি) এবং কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক প্রযুক্তির মাধ্যমে পঠনপাঠনে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে৷ অডিও-ভিডিও, ই-বুক এবং জার্নালের মাধ্যমে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে৷ 
তবে হাতে মোবাইল বা ইন্টারনেট পরিষেবা নেই, তাদের জন্য স্বয়মপ্রভা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ২৪x৭ ডিটিএইচ (ডায়রেক্ট টু হোম)-এর মাধ্যমে সারা দেশে ৩২টি উচ্চমানের শিক্ষামূলক চ্যানেলের সম্প্রচার করা হচ্ছে৷ এই চ্যানেলগুলিতে পড়াশোনার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করছে IIT, UGC, NCERT -র মতো সংগঠন৷ 

কিন্তু প্রশ্ন হল ভারতের মতো দেশ, যেখানে ইন্টারনেট ইউজার মাত্র ৩৬ শতাংশ মানুষ৷ প্রতি ১০০ জনের মধ্যে স্থায়ী ব্রডব্যান্ড পরিষেবা রয়েছে মাত্র ১.৩৪ শতাংশের হাতে এবং মাত্র ৪৬ শতাংশ বাড়িতে টেলিভিশন রয়েছে, সেখানে এই শিক্ষা ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হবে৷ এই প্যানডেমিকে অনলাইন বা টিভির মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সত্যই চ্যালেঞ্জিং কাজ৷ 

আরও একটি সমস্যা হল, পড়ুয়ারা সদ্য ই-লার্নিং পদ্ধতির মধ্যে প্রবেশ করেছে৷ তাদের অনেকেই এটিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে না৷ শিক্ষকদের বক্তব্যও অনেক সময় এড়িয়ে যাচ্ছেন তারা৷ হচ্ছে না হোম টাস্ক এবং তার যথাযথ মূল্যায়ন৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + eighteen =