প্লাস্টিকের বোতল থেকে গরম জামা, রূপকার ১৬ বছরের ছাত্রী, কীভাবে?

নয়াদিল্লি : জীবনের কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হয়নি মেয়েটা। কিন্তু এরই মধ্যে সমাজের জন্য কিছু করার উদ্যোগ নিয়ে ফেলেছে সে। বলা ভালো সেই হতে পারে সমাজের পথ প্রদর্শক। একদিকে পরিবেশ রক্ষা, অন্যদিকে দরিদ্রদের গরম জামা পৌঁছে দিচ্ছে সে- কীভাবে? তাঁর উদ্যোগের কথা যে কাউকে প্রেরণা দিতে পারে। বয়স মাত্র ১৬। দেবিকা চাবড়া। জিডি গোয়েঙ্কা পাবলিক স্কুলের

প্লাস্টিকের বোতল থেকে গরম জামা, রূপকার ১৬ বছরের ছাত্রী, কীভাবে?

নয়াদিল্লি : জীবনের কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হয়নি মেয়েটা। কিন্তু এরই মধ্যে সমাজের জন্য কিছু করার উদ্যোগ নিয়ে ফেলেছে সে। বলা ভালো সেই হতে পারে সমাজের পথ প্রদর্শক। একদিকে পরিবেশ রক্ষা, অন্যদিকে দরিদ্রদের গরম জামা পৌঁছে দিচ্ছে সে- কীভাবে? তাঁর উদ্যোগের কথা যে কাউকে প্রেরণা দিতে পারে।

বয়স মাত্র ১৬। দেবিকা চাবড়া। জিডি গোয়েঙ্কা পাবলিক স্কুলের ছাত্রী। রাস্তায় প্রতিদিন স্কুল থেকে বাসে করে বাড়ি আসার সময় তার নজরে আসে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের স্তূপ। নজরে আসে রাস্তার ধারে কতগুলি অসহায় মুখের সারি। যাঁদের প্রবল শীতে গায়ে পর্যাপ্ত জমা কাপড় নেই। নিজের ভেতরে রাগ জমা হতে থাকে। প্লাস্টিক যে পরিবেশের সর্বনাশ করছে, সেকথা সে জানত। এই নিয়ে কিছু করার কথা ভাবছেন না রাজনীতিবিদরা। পরিবেশবিদরা বারবার গলা ফাটাচ্ছেন। কারো কোনো হুশ নেই। এর রাগ থেকেই ভাবনার জন্ম। প্লাস্টিকের বোতল থেকে কিছু করার ভাবনা।

একদিন রাত ৩টে নাগাদ ঘুম ভেঙে নিজের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। কিছু করার প্রবল তাগিদ। দ্বৈত ভাবনা নাড়া দিতে থাকে মনকে। মাত্র ১৬, আমি পারব? তারপরে ভাবনা আসে, আমিই তরুণ, আমি না করলে, আর কে করবে? সেই ভাবনার লড়াই থেকে জন্ম হয় রিপ্লাস্টিকো প্রজেক্ট।

২ সমস্যা সমাধান ১
একদিকে প্লাস্টিক পরিবেশের সর্বনাশ করছে। অন্যদিকে শুধু দিল্লিতেই ২ লাখ মানুষ ফুটপাতবাসী। তাঁদের গরম জামা পর্যন্ত নেই। এমনটা একটা মেকানিজম মাথায় আসে, যেখান থেকে এই প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করে জামা বানানো সম্ভব। শুরু কাজ। ফল হাতনাতে।

প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ শুরু
রাস্তায় বিভিন্ন সময় কোল্ড ড্রিঙ্ক, জলের বোতল তাঁর নজর এড়ায়নি। সে সেগুলি সংগ্রহ করে। বন্ধুদেরও বলে, এসেবর জোগান দিতে।

ছিল বোতল হল গরম জামা
দেবিকা জানাল, এই কাজ মোটেই সহজ ছিল না। সারা বিশ্বের প্রতি মিনিটে প্রায় এক মিলিয়ন প্লাস্টিকের বোতল দূষণ তৈরি করে। অথচ রিসাইকেল অর্থাৎ পুনর্বব্যবহারযোগ্য হয় তার মাত্র ৭ শতাংশ।

প্রক্রিয়া
১. প্রথমে সংগ্রহ
২. লেবেল ও ছিপি বের করা
৩. পরিষ্কার করে তা গলানো
৪. সেগুলিয়ে প্লস্টিকের শিট তৈরি করা হয়
৫. তারপর প্লাস্টিকের পাতলা সুতো তৈরি করে জামা বোনা হয়

এই প্রক্রিয়া মোটেই মুখের কথা নয়। এর জন্য ভালো টাকার প্রয়োজন। অর্থ সংগ্রহ করে দেবিকা নিজেই। এই কাজে তাকে কেউই নিরুৎসাহ করেন না। তার কথায়, এই উদ্যোগ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। আগামী দিনে এটা যে সমাজকে পথ দেখাবে, তা বিশ্বাস করে দেবিকা। পড়াশুনো, কেরিয়ার সঙ্গে নিয়ে সে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আগামীর নেতৃত্ব দেব, কাজ শুরু এখন
আমরা তরুণ, আমরাই আগামীকে পথ দেখাব। একথা মাথায় রেখে আমার এই উদ্যোগ। সমাজের সমস্যা থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারিনি। তাই এখনই কাজে নেমে পড়েছি। জানাল দেবিকা। আগামীর দিশারী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − twelve =