কলকাতা: ইঙ্গিত ছিল৷ এবার রাজ্যেও বাতিল হয়ে গেল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা৷ কীভাবে মূল্যয়ন করা হবে? তাও নিয়ে বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে বলে ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ আদালতের নির্দেশে সঙ্গে সংগতি রেখে, বিশেষজ্ঞ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ জানিয়েছেন, কীভাবে মূল্যায়ন হবে, তা নিয়ে পরবর্তী ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে৷
তিন দিনের বাকি পরীক্ষা বাতিল হলেও আগে বেওয়া পরীক্ষা কোনও ভাবেই বাতিল হচ্ছে না৷ তবে, বাকি পরীক্ষার মূল্যয়ম কীভাবে হবে, তা বিস্তারিত জানানো হবে৷ মূল্যায়ন পদ্ধতিতে কেউ অখুশি হলে পরীক্ষা দিতে পারবে পড়ুয়ারা, তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর৷ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ নয়া মূল্যায়ন পদ্ধতি অনুযায়ী ৩১ জুলাইয়ের ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ করা হতে পরে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷
আজ সাংবাদিকদের বৈঠক করে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘‘বিশেষজ্ঞ কমিটি সুপারিশ, উচ্চ শিক্ষা পর্ষদের সুপারিশ এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় ওপর সম্মতি রেখেই আমরা বলতে চাই, বিগত তিনমাস ধরে এই লকডাউন চলছে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে পরীক্ষা কীভাবে করা যেতে পারে তার জন্য বিভিন্ন রাজ্যে খোঁজখবর রেখেছিলাম৷ কিন্তু করোনা যেভাবে তার প্রভাব বিস্তার করেছে, আমরা অনেক চেষ্টা করার পরেও আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে, আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি বিবেচ্য বিষয় ছিল ছাত্র ছাত্রী এবং শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের সুস্বাস্থ্য কীভাবে তা বজায় রাখা যায়৷ এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, আমরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যেওও খবরা-খবর রেখে চলার জন্য উচ্চ শিক্ষা পর্ষদ যে কমিটি গঠন করেছিল, তাদের সুপারিশ উচ্চ শিক্ষা সংসদ গ্রহণ করে আমাদের কাছে পাঠিয়েছে৷’’
এরপর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে এই সমস্ত বিষয়ে জ্ঞাত করে আমরা বলতে চাই, সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে সংগতি অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, উচ্চ শিক্ষা পর্ষদের সুপারিশ অনুযায়ী, ২, ৬, ৮ জুলাই উচ্চমাধ্যমিকের তিন দিনের বাকি পরীক্ষা বাতিল করা হল৷ ওই দিন কোন পরীক্ষা হবে না৷ পরীক্ষা বাতিল৷ মূল্যায়নের বিষয়ে বিধি তৈরি করছে পর্ষদ৷ তারা সেটা বিজ্ঞাপিত করবে৷ আমরা শুধু বলেছি, তাদের বিজ্ঞাপিত অংশে যদি দেখা যায় অসন্তুষ্ট হচ্ছেন কেউ, তাহলে পরিস্থিতি বদলালে তাঁদের পরীক্ষা সুযোগ পাবেন৷’’ শিক্ষামন্ত্রীর যুক্তি, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ফল প্রকাশ না হলে, সর্বভারতীয় স্তরে পরীক্ষায় বসতে পারবে না উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীরা৷ ফলে, ফল প্রকাশ দ্রুত করা হবে৷ এবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১২ মার্চ৷ ২৭ মার্চ পর্যন্ত পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে শেষ তিন দিনের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়৷ ২৩, ২৫ ও ২৭ মার্চের পরীক্ষা নতুন করে ২, ৬, ৮ জুলাই নেওয়ার ঘোষণা হলেও তা এখন পুরোপুরি বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে৷
পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে একাধিক শিক্ষক সংগঠন৷ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র জানিয়েছেন, ‘‘সমিতির পক্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক বাকি পরীক্ষাগুলি ২, ৬ ও ৮ জুলাই হবে না বলে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে ঘোষণা করেছেন তা বাস্তবোচিত বলে স্বাগত জানাচ্ছি৷’’ অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র বৈশাখী সাহা বলেন, ‘‘ছাত্র ছাত্রীদের কথা চিন্তা করে খুব তাড়াতাড়ি যেকোন একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ঘোষণা করুক৷ সেই সিদ্ধান্ত যেন মেধাবী থেকে সাধারন সকল ধরনের ছাত্র ছাত্রীদের কথা বিবেচনা করে নেওয়া হয়৷’’