স্কুলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে জারি একগুচ্ছ নির্দেশিকা, দেরিতে হলেও নড়েচড়ে বসছে পর্ষদ

স্কুলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে জারি একগুচ্ছ নির্দেশিকা, দেরিতে হলেও নড়েচড়ে বসছে পর্ষদ

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের নজরে এবার স্কুলগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বহু স্কুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। সেখানে দায় এড়াতে শুধু চাপানউতোর দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিভাবকদের দাবি স্কুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বহুবার তাঁরা প্রশ্ন তুললেও সেগুলি যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। এই পরিস্থিতিতে দেরিতে হলেও রাজ্যের স্কুলগুলিতে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো যে প্রয়োজন, তা উপলব্ধি করতে পেরেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ তথা শিক্ষা দফতর। সেই সূত্রে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে স্কুল ভিত্তিক একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ ব্যাপারে সাত দফা নির্দেশিকা জারি করেছে পর্ষদ। তাতে ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি মনিটরিং কমিটি’ গঠনের কথা বলা হয়েছে। কমিটিতে কারা কারা থাকবেন সেটাও ঠিক করে দিয়েছে পর্ষদ। তাতে বলা হয়েছে স্কুলের নিরাপত্তা কমিটিতে থাকবেন প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অথবা চেয়ারম্যান। সেই সঙ্গে রাখতে হবে একজন শিক্ষিকাকে। তবে শিক্ষিকা স্কুলে না থাকলে তাঁর পরিবর্তে স্কুলের কোনও শিক্ষক সেই দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া কমিটিতে থাকবেন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, অভিভাবকদের পক্ষ থেকে দু’জন, পুলিশ প্রশাসন এবং রাজ্যের পরিবার ও সমাজ কল্যাণ দফতরের দুই আমন্ত্রিত প্রতিনিধি। উল্লেখ্য বিভিন্ন সময়ে নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুলের পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে বহুবার অভিভাবকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এবার তাঁদের উদ্বেগ কমাতেই এই ধরনের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পর্ষদ সূত্রে খবর।

 

প্রতি বছর ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের নানা প্রান্তে। তাই স্কুলগুলিতে যাতে এই ধরনের মশাবাহিত রোগ ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে কমিটির সদস্যদের। এর পাশাপাশি স্কুল চত্বর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক শৌচাগারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সিসিটিভির বন্দোবস্ত ইত্যাদির ব্যবস্থা করবে কমিটি। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি পড়ুয়ারা যে জল পান করে থাকেন, তা কতটা বিশুদ্ধ সেই লক্ষ্যে জলের নমুনা সংগ্রহ করে সেটি রাজ্য সরকারের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে কমিটিকে। এছাড়া ক্লাসরুমে সিলিং ফ্যান যাতে খুলে পড়ে না যায়, বিদ্যুতের লাইন যাতে ঠিক থাকে, কোথাও শর্ট সার্কিট হয়ে যাতে আগুন না লাগে, ইত্যাদির দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে কমিটিকে। এ বিষয়ে পর্ষদের নির্দেশ ছয় মাস অন্তর লাইসেন্সপ্রাপ্ত ইলেকট্রিশিয়ানকে দিয়ে সেগুলি পরীক্ষা করাতে হবে। এখানেই শেষ নয়, দুর্ঘটনা এড়াতে রাজ্য সরকারের ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর মতো সতর্কতা মূলক প্রচার যাতে চলে সেই ব্যবস্থাও করতে হবে কমিটিকে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই নির্দেশিকাকে স্বাভাবিকভাবেই স্বাগত জানিয়েছে সব মহল। এতে পড়ুয়ারা স্কুলে নিশ্চিন্তে ক্লাস করতে পারবে বলে সকলেই মনে করছেন। সূত্রের খবর এই মনিটারিং কমিটি শীঘ্রই গঠন করা হবে। এরপর কমিটি যাতে দ্রুত তার কাজ শুরু করে দেয় সেই নির্দেশ ইতিমধ্যেই দিয়েছে পর্ষদ। তাই পড়ুয়াদের স্বার্থে মনিটরিং কমিটির কাজকর্ম বা বিভিন্ন সুপারিশ কতটা বাস্তবায়িত হয় এখন সেটাই দেখার।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − nine =