কলকাতা: চলতি প্রবাদ আছে, ‘ছিল রুমাল হল বিড়াল!’ এবার এই প্রবাদকে বাস্তবের মাটিতে নামিয়ে আনল ইয়ুথ পার্লামেন্ট প্রতিযোগিতা! আদতে গোটা বিষয়টি যুব কল্যাণ দপ্তরের তত্ত্বাবধানে হলেও নয়া নজির গড়ল পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি৷ বিদ্যাসাগরের মুখ ঢেকে সরকারি অনুষ্ঠানের পুরস্কারের পিছনে জ্বলজ্বল করছে শাসকদলের উপস্থিতি৷ সোশ্যাল দুনিয়ায় হাত ধরে তা আপাতত ভাইরাল৷
মাত্র ১৪ সেকেন্ডের একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, যুব সংসদ প্রতিযোগিতা ২০১৯, মন্দিরবাজার ব্লকের একটি মেমেন্টোয় বিদ্যাসাগরের মুখ ঢেকে সাঁটানো হয়েছে যুব পার্লামেন্টের ফলাও করা একটি স্টিকার৷ স্টিকারে লেখা ইউথ পার্লামেন্ট ২০১৯, মন্দিরবাজার ব্লক৷ মন্দিরবাজার ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতাটি হয় আঁচনা হাই স্কুলে৷ তারও উল্লেখ রয়েছে সেখানে৷
অভিযোগ, সেরা মুখ্যমন্ত্রী, সেরা অর্থমন্ত্রী, সেরা শিক্ষামন্ত্রী বিভাগে বিজয়ীদের হাতে যে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে, সেই মেমেন্টোয় বিদ্যাসাগরের মূর্তি বিদ্যাসাগরের মুখ ঢেকে দেওয়া হয়েছে একটি স্টিকার৷ সেই স্টিকার খুললে মেমেন্টোয় জ্বলজ্বল করছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষা সমিতির নাম লেখা একটি অংশ৷ কিন্তু, তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের নামে ছাপানো মেমেন্টো ঢেকে কেন সরকারি অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হল? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷ অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষা সমিতির ব্যবহার করা ইয়ুথ পার্লামেন্ট ২০১৯ প্রতিযোগিতার মেমেন্টো হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে৷ গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে শুরু করছেন একাধিক বিরোধী শিক্ষক সংগঠন৷
জানা গিয়েছে, সোমবার মন্দিরবাজারে আঁচনা হাই স্কুলে ব্লক স্তরের ইয়ুথ পার্লামেন্ট প্রতিযোগিতা হয়৷ সেখানে ব্যক্তিগত বিভাগে একাধিক পুরস্কার দেওয়া হয়৷ কিন্তু ব্যক্তিগত বিভাগে বিজয়ীদের যে মেমেন্টো দেওয়া হয়েছে তার পিছনে লেখা রয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র নাম৷ গোটা প্রতিযোগিতাটি যুব কল্যাণ দপ্তরের তত্ত্বাবধানে হলেও কেন তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের ব্যবহার করা পুরস্কার পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হল? এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷
পড়ুয়াদের উৎসাহ দিতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে৷ এই অনুষ্ঠানের জন্য ব্লক পিছু প্রায় ৬০ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে থাকে যুব কল্যাণ দপ্তর৷ কিন্তু অভিযোগ, পড়ুয়াদের জন্য নির্দিষ্ট ট্রফি না কিনে তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ট্রফি পুনর্ব্যবহার করা হয়েছে৷ শিক্ষকদের অনেকেই অভিযোগ তুলছেন, মেমেন্টো কেনার টাকা সরিয়ে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষা সমিতির পুরনো মেমেন্টোয় স্টিকার সাঁটিয়ে পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷ তাও আবার বিদ্যাগরের মুখ ঢেকে৷ যদিও যে স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেই স্কুলের আবার পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির আওতায়৷ শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়া স্কুলের বিরুদ্ধে মেমেন্টো বিভ্রাট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক৷ কিন্তু, কেন এই ধরনের বিভ্রান্তি? চেষ্টা করেও স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷