নয়াদিল্লি: আজ, সোমবার নয়া শিক্ষানীতির পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যগুলির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন৷ সেখানে তিনি জানান, বহুদিন ধরে শৈশব ও কৈশোরে পড়ুয়াদের ওপর অযথা ব্যাগ, বোর্ড পরীক্ষার বোঝা চেপেছে৷ নয়া শিক্ষানীতি সেই বোঝা লাঘব করবে৷
সোমবারের এই বৈঠকে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি প্রতিটি রাজ্যের রাজ্যপালরা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পড়ুয়ারা পরিবার ও সমাজের চাপের মধ্যে ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে। খেলাধুলো করারও সময় পায় না তারা। এই পরিস্থিতি থেকে তাদের বের করে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে নয়া শিক্ষানীতিতে। পাশাপাশি নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে, চিরাচরিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে দূরে সরিয়ে পড়াশোনা করার বদলে 'শেখার' দিকে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে। প্রধান মন্ত্রী জানান, পাঠ্যক্রমের বাঁধন থেকে বেড়িয়ে এসে গঠনমূলক চিন্তাভাবনা তথা আবেগ, বাস্তবতা এবং কর্মদক্ষতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এই নীতিতে।
যদিও দীর্ঘ ৩৪বছর পর জাতীয় শিক্ষানীতি পরিবর্তনে এই নীতির ঘোর আপত্তি জানিয়েছিল বাংলা সহ একাধিক রাজ্য। গতকাল পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, তিনি এই বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও এই নীতি কখনওই মেনে নেওয়া হবে। তাঁর যুক্তি, এই নীতি কার্যকর হলে যে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তার বোঝা এসে চাপবে রাজ্যগুলির ওপর। পাশাপাশি রাজ্যের মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়গুলির অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে। সোমবারের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী আশ্বস্ত করেন, এই নয়া শিক্ষানীতির রূপায়নে যে সংশয় হবে তা খুব স্বাভাবিক, তবে সেই সংশয় কাটানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি তিনি জানান, ইতিমধ্যেই একাধিক মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেই এই নীতি নিয়ে এসেছেন কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিদেশ নীতি, প্রতিরক্ষা নীতির মতোই শিক্ষানীতিও দেশের নীতি। কোন সরকার কেন্দ্রে বসে আছে তা এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়। শিক্ষানীতিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। বরং সেখানে শিক্ষক, অভিভাবক ও পড়ুয়াদের কথা ভাবাই একান্ত যুক্তিযুক্ত।”
যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগে বলেছিলেন, রাজ্য গুলিকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্র এই নীতি রূপায়ন করতে চাইছেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ভেঙে দিতে চাইছেন মোদী সরকার। সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদের চাপে পড়ে এই নীতি নিয়ে পর্যালোচনা করার কথা বলেছিলেন। সেই মতোই সোমবার অনলাইন ভিডিও কলের মাধ্যমে এই বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যসভায় বিল পাশ হলেই এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলেই এই নীতি বাস্তব রূপ নেবে।