কলকাতা: কিছুই জানেন না শিক্ষামন্ত্রী! জানেন না মুখ্যমন্ত্রীও! কিন্তু, ঢাকঢোল পিটিয়ে জারি হয়েছে সরকারি দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি৷ আর সেই বিজ্ঞপ্তি ঘিরে সংবাদমাধ্যম ও অভিভাবকমহলে সমালোচনার পর অবশেষে ঘুম ভাঙল রাজ্য প্রশাসনের৷ সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রীকে ফোন মুখ্যমন্ত্রীর৷ বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় রাতারাতি বাতিল স্কুল শিক্ষা দপ্তরের দূষণবিধি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি৷
কিন্তু, হঠাৎ কী নিয়ে এত বিপত্তি, বিতর্ক? গত ২৭ জানুয়ারি আজ বিকেল ডট কমে ‘গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না শিক্ষকরা, নয়া নির্দেশ রাজ্যের’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়৷ ওই প্রতিবেদনে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের জারি করা দূষণবিধির প্রসঙ্গ তোলা হয়৷ পরিবেশ আদালতের বিধি উল্লেখ করে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের তরফে জানানো হয়, দূষণ রুখতে পড়ুয়া, শিক্ষকরা ব্যক্তিগত গাড়ি করে স্কুলে যাতা-যাত করতে পারবে না৷ বাধ্যতামূলকভাবে স্কুলবাস ও পুলকার ব্যবহার করতে হবে৷ গত মাসের শেষের দিকে আজ বিকেল ডট কমে ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলার বিভিন্ন প্রথম শ্রেণির সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়৷ শিক্ষা দপ্তরের নয়া দূষণবিধি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠার পর ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামে রাজ্য প্রশাসন৷
দূষণবিধি সংক্রান্ত গতমাসের নির্দেশ রাতারাতি প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়৷ সূত্রের খবর, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে৷ নির্দেশিকা প্রত্যাহার করার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ইতিমধ্যেই সেই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে দপ্তরের কোন আধিকারিক, কার নির্দেশ, কেন তথ্যের ভিত্তিতে ওই নির্দেশ জারি করেছেন, সেবিষয়েও রিপোর্ট তলব করেছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ জানিয়েছেন, কোনও ভাবেই কার্যকর হবে না শিক্ষাদপ্তরের দূষণবিধি৷
গতমাসে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর, গ্রিন ট্রাইবুন্যালের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, দূষণ এবং যানজট এড়াতে এখন থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাবে না৷ কলকাতার ২৬ টি নামকরা বিদ্যালয়ে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়৷ তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক৷ এই বিদ্যালয়গুলির মধ্যে রয়েছে কলকাতার লা মার্টিনিয়ার স্কুল, ডন বস্কো পার্কসার্কাস, বিড়লা হাই স্কুল, সেন্ট জেমস, প্র্যাট মেমোরিয়াল, মডার্ন হাই স্কুল, সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুল ইত্যাদি৷ এই নির্দেশিকায় বিশেষ কিছু জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়৷ বিদ্যালয়গুলিকে বাস চালু করার কথা বলা হয়৷ একটি রুটের যানে একাধিক পড়ুয়া যাতায়াত করার নির্দেশ দেওয়া হয়৷ এরফলে ওই রুটে একটা নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ির সংখ্যা যেমন কমবে তেমনি কম হবে দূষণের মাত্রা৷ বিদ্যালয়গুলি বাস না পুলকার কোনটা চালু করবে সেটা নির্ভর করবে অভিভাবকরা কোন যানকে প্রাধান্য দিচ্ছে তার ওপর৷ রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের এই নির্দেশ জারি হওয়ার পর অভিভাবকমহলে তৈরি হয় ক্ষোভ৷