কলকাতা: চোখ রাঙাচ্ছে করোনা৷ করোনা প্রতিরোধে ইতিমধ্যেই লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার৷ লকডাউন হওয়ার আগেই দেশ ও রাজ্যের সমস্ত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে শিক্ষা দপ্তর৷ স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পঠনপাঠান৷ লকডাউনের মধ্যেও যাতে পঠনপাঠান চালু রাখা যায় তা নিশ্চিত করতে সরাসরি ভার্চুয়াল ক্লাসের ঘোষণা করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷
আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ এবার সরাসরি টিভির পর্দায় পঠন-পাঠনের চালু করার ঘোষণা করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ শুধুমাত্র নবম ও দ্বাদশ শ্রেণির জন্য এই ব্যবস্থা চালুর ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ দূরদর্শনের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা চালু করার ঘোষণা করেছেন তিনি৷ আগামী ৬ এপ্রিল থেকে পর্যায়ক্রমে সমস্ত শ্রেণির জন্য এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷
আজ সাংবাদিক বৈঠক করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘ভার্চুয়াল ক্লাস যেভাবে হয়, আমরা পড়ুয়াদের সেভাবে শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি৷ এবং সেখানে নির্দিষ্ট অধ্যায়ের উপরে আলোচনা করা হবে৷ ছাত্রছাত্রীরা অনুষ্ঠানের আগে ও পরে বা চলাকালীন ইমেল, হোয়াটস্যাপ, ফোন করে সরাসরি প্রশ্ন করতে পারবেন৷ অনুষ্ঠান শেষে বাড়িতে বসে পড়ার জন্য একটি অ্যাক্টিভিটি ট্যাক্স দেওয়া হবে৷ অনুষ্ঠানের পরে বাড়িতে বসে তা করতে হবে পড়ুয়াদের৷ যখন স্কুল খুলবে তখন স্কুলের শিক্ষকের কাছে তা জমা দিতে হবে৷’’
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘‘আগামী ৬, ৭ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বিকেল চারটে থেকে পাঁচটা পর্যন্ত এই এক ঘণ্টা দূরদর্শনের মাধ্যমে বিশেষ অধ্যায়ে নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষকরা শিক্ষাবিদরা ক্লাস নেবেন৷ ইমেল কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ, ফোন করে তাঁরা প্রশ্ন করতে পারবেন৷ অনুষ্ঠান শেষে এক টিভি অ্যাক্টিভিটি ট্যাক্স দেওয়া হবে৷ সেটা তারা করে রেখে দেবে৷ বিদ্যালয় যখন খুলবে তখন সেটা তারা শিক্ষকদেরকে দেখাবেন৷ এটা শুধুমাত্র হবে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছি৷ প্রি-প্রাইমারি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত আমরা আগেই জানিয়েছি, কাউকে আটকানো যাবে না৷ কিন্তু সেই সময় আমরা একটা অ্যাক্টিভিটি টাক্স দেওয়া যায় কি না, দেখা হচ্ছে৷ বিদ্যালয় খুলে শিক্ষকের কাছে তা জমা দিতে হবে৷ এটা আমরা বলেছি, যদি তারা করেন ভালো হয়৷ মডেল অ্যাক্টিভিটি টেক্স শুরু হবে৷ ৬ এপ্রিল থেকে পর্যায়ক্রমে সব শ্রেণির জন্য৷’’
অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচারস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দন গরাই বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা দপ্তর আধুনিক পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে দূরদর্শনের মাধমে ক্লাস নেওয়ার যে ব্যবস্থা করেছেন, তা অত্যন্ত কার্যকরী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত৷ দূরদর্শন বা ডিডি বাংলা চ্যানেলে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের মাধ্যমে এই ক্লাস ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে মনোগ্রাহী করে তুলবে এবং তাদের পঠন পাঠনে অগ্রগতি ঘটবে৷ ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাস চলাকালীন এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেলের মাধ্যমে প্রশ্ন-উত্তর করার ব্যবস্থায় আমরা অত্যন্ত আশাবাদী৷ এছাড়াও এইডিজিটাল ক্লাসেই হোম টাস্ক দেওয়া ও সেই টাস্ক বিদ্যালয় টিচারদের গাইড করার বিষয়টিও খুবই যুক্তিযুক্ত৷ আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে সকল শিক্ষকদের এই ডিজিটাল ক্লাসের মাধ্যমে পাঠদানে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করব৷’’