শাম্মী হুদা: জলই জীবন, শৈশবের পাঠ্যবই আলো করে থাকা শব্দগুচ্ছ গোটা জীবনের জন্যই পাথেয় হয়ে থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সভ্যতার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পরিবেশ দূষণ ভারতবর্ষের কাছে একটা বিরাট বড় সমস্যা। গাছ কেটে শহর তৈরি করতে গিয়ে অক্সিজেনের ঘাটতি বাড়ছেকর্মশ, পাল্লা দিয়ে পুকুর, খাল-বিল, ঝলাধার বুজিয়েও চলছে নির্মাণ। একে গাছ নেই, তায় জলাশয়ও বিলীন ফলত অল্প বৃষ্টিতেই শহর ডুবছে। হচ্ছে বন্যা, আর জল নামলে মহামারী। তাই বৃষ্টি চেয়েও বিপদে মানব সভ্যতা। অন্যদিকে গাছ কমাতে পরিবেশের ধারণ ক্ষমতা কমেছে, সবুজায়নের সংকীর্ণতা বৃষ্টিপাতের স্বাভাবিক পরিমাণ কমিয়েছে। তবে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দূষণ।
এদিকে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কমাতে মাটির তলার জলস্তর অনেক নিচে নেমে গিয়েছে। গ্রীষ্ম প্রধান দেশে এ এক ভয়াবহ ছবি। গবেষণা বলছে, এখনই যগি জল বাঁচানোর উপায় শুরু না হয়, তাহলে আগামী ২০৩০-র মধ্যেই ভারতবর্ষের বেশ কয়েকটি রাজ্য জলশূন্য হয়ে পড়বে। শুরু হবে পানীয়জলের জন্য হাহাকার। এই তালিকায় একদম প্রথমের সারিতে রয়েছে শহরাঞ্চলগুলি, যার মধ্যে অন্যতম রাজধানী দিল্লি, চেন্নাই ও বেঙ্গালুরু। দেশের ৪০ শতাংশ জল সরবরাহ হয় মাটির তলা থেকে। এদিকে যার মধ্যে ৭০ শতাংশ জল কলুষিত। তাই চাইলেও সব জায়গার জল ব্যবহার করা যায় না। এমতাবস্থায় জল সাশ্রয়ে উদ্যোগী না দুর্দিন আসতে সময় লাগবে না।
বলা বাহুল্য, প্রতিদিনের ব্যবহৃত জলকেই পরিশ্রুত করে তা পুনর্ব্যবহারের কাজে লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা। ইতিমধ্যে সেকাজ শুরুও হয়েছে। নাগপুর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের উদ্যোগে চলছে জল পরিশ্রুতকরণের কাজ। যা দিয়ে খরাপ্রবণ মহারাষ্ট্র তৃষ্ণা মেটাবে। নাগপুর শহরেই প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা হয়েছে। নিকটবর্তী থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের সহযোগিতায় চলছে কাজ। প্রতিদিন ব্যবহৃত ৫২৫ মিলিয়ন লিটার জল থেকে করে ৪৮০ মিলিয়ন পরিশ্রুত জল মিলছে। নাগপুরের দেখানো পথই অবলম্বনের নির্দেশ দিচ্ছে সরকার। কেন্দ্রের নির্দেশ মাফিক প্রত্যেকটি রাজ্যে কাজ শুরু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকাতে বলা হয়েছে, এজন্য থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের কাছে পরিশ্রুতকরণের ব্যবস্থা হোক। শহর থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যেই থাক থার্মাল পাওয়ার স্টেশন। তাহলে পরিশ্রুত জল তাড়াতাড়ি পেতে কোনও সমস্যা হবে না। নাগপুরের দেখানো পথেই হাঁটুক গোটা দেশ এমনটাই কাম্য।