কিছুদিন আগেও ছিলেন ঝাড়ুদার, আজ তিনিই ডেপুটি কালেক্টর

কিছুদিন আগেও ছিলেন ঝাড়ুদার, আজ তিনিই ডেপুটি কালেক্টর

জয়পুর: রাস্তার ঝাড়ুদার থেকে ডেপুটি কালেক্টর! পথটা মোটেই সহজ ছিল না রাজস্থানের বাসিন্দা আসা কান্ডারার জন্য৷ জীবন সংগ্রামে বহু দুর্গম পথ পেরিয়ে আজ তিনি ঝাড়ুদার থেকে ডেপুটি কালেক্টর৷ স্বামীর ঘর ছেড়ে এসেছিলেন বছর আটেক আগেই৷ দুই সন্তানকে নিয়ে প্রবল অর্থকষ্টের মধ্যে একা লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন৷ জয়পুরের রাস্তায় একসময় ঝাড়ুদার হিসেবেও কাজ করেছেন। অবশেষে জীবন যুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিলেন তিনি৷ রাজস্থান অ্যাডমিনেস্ট্রেশন সার্ভিস (আরএএস) কমিশনের পরীক্ষায় পাশ করে ডেপুটি কালেক্টর হতে চলেছেন আশা কান্ডারা।

বছর দুয়েক আগে ২০১৯ সালে পরীক্ষা আরএএস পরীক্ষা দিয়েছিলেন আশা। তবে করোনা নামক অতিমারির কারণে এত দিন পর তার ফল প্রকাশিত হয়েছে৷ সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হতেই আশা দেখেন তিনি পাশ করেছেন। দীর্ঘদিনের এই জীবন সংগ্রামে অবশেষে সাফল্যের মুখ দেখলেন তিনি৷ আট বছর আগে স্বামীকে ছেড়ে চলে এসে তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে বহু সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে জীবন কাটিয়েছেন আশা। রাজস্থানের জয়পুরের রাস্তায় ঝাঁট দিয়েছেন একসময়৷ এই কাজ করতে করতেই সরকারি পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। বাড়িতে এসে নিজের সন্তানদের দেখভাল করার পর পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করতেন তিনি৷ এই কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার  পেলেন আরএএস পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হতেই। পরীক্ষায় পাশ করার পর রাজ্য সরকারের ডেপুটি কালেক্টরের পদে নিযুক্ত হতে চলেছেন তিনি।

আশা বলেন, ‘পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে সবসময়ি একটা বৈষম্য রয়েছে৷ আমাকে মেয়ে হিসেবে অনেক সময়ই বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে। তবে আমি সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিদ্রুপ, অবহেলা, অসহযোগিতা পেয়ে হতাশার বদলে আমার জেদ তৈরি হয়েছে অনেক বেশি। কিছু করে দেখানোর এই জেদ আমার মধ্যে ছিলই। এই খবর পেয়ে আমি খুশি।’ আশা সরকারি চাকরি করে সন্তানদের একটি উন্নত জীবনযাত্রা দিতে চান। তাদের ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করা এবং ভালো করে পড়াশোনা করানোর ইচ্ছে রয়েছে তাঁর৷ শুধু তাই নয়, অনেককে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্যও করতে চান। অনেক অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের আগামী দিনে সাফল্যের মুখ দেখাতে চান। আশার জীবন যুদ্ধের কাহিনি এই মুহূর্তে সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনদের থেকে প্রচুর প্রশংসাও পাচ্ছেন তিনি। তাঁর এই লড়াইয়ে নতুন করে আশার আলো দেখছেন আরও অনেকে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − seven =