দেশীয় প্রযুক্তিতে অনলাইন ক্লাসরুমের বন্দোবস্ত করেছে কলকাতার সংস্থা

দেশীয় প্রযুক্তিতে অনলাইন ক্লাসরুমের বন্দোবস্ত করেছে কলকাতার সংস্থা

কলকাতা: কোনও বিতর্কিত কিংবা নিষিদ্ধ এপ্লিকেশন নয়, বরং সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস করা যেতে পারে এবার৷ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের একটি সংস্থা এই প্রযুক্তি বাজারে এনেছে৷ বিতর্কিত জুম এপ্লিকেশনের ব্যবহার কমাতে বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ সরকারি ক্ষেত্রে তো ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ জুমের ব্যবহার৷ এই পরিপ্রেক্ষিতে, Creative Group-এর তৈরি এই সফটওয়্যার ভিডিও কনফারেনসিং এর বাজারে আলোড়ন ফেলতে পারে৷

কোভিড-১৯ জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট করেছে৷ বিপর্যস্ত মানুষের জীবন৷ দেশের অর্থনীতির বড়সর ক্ষতির সামনে দাঁড়িয়ে৷ তবে এই সব কিছুর মধ্যেই অন্যতম চিন্তার কারণ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ৷ কবে, স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক ক্লাস চালু করা যাবে তা নিশ্চিতরূপে সরকারের পক্ষে বলা কঠিন৷ এই পরিস্থিতিতে, রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুলে ‘অনলাইন’ ক্লাসের বাড়বাড়ন্ত৷ এই পদ্ধতিতে, কিছুটা হলেও বাড়ি বসেই ক্লাসরুমে পৌঁছে যাওয়ার সুবিধা পাচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা৷ কিন্তু, এর মাঝেই আশঙ্কাজনক ভাবে নিষিদ্ধ এপ্লিকেশন ‘জুম’-এর ব্যবহার বাড়ছে হু-হু করে৷ মনে রাখা প্রয়োজন, কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই সরকারি ক্ষেত্রে জুমের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷

তবে, সুখের বিষয় এই যে, সম্পুর্ন ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি একটি ভিডিও কনফারেনসিং সফটওয়্যার বাজারে হাজির৷ ভারতেই রয়েছে এই সফটওয়্যারের সার্ভার৷ সেক্ষেত্রে, তথ্য বা ডেটা চুরির সম্ভাবনা নেই৷ জুম-এর একটি সার্ভার চিনে থাকায় ডেটা চুরির যে প্রবল সম্ভাবনা ছিল, তা এই ভারতীয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে আটকান যেতে পারে বলে দাবি করেছে সংস্থা৷

ইতিমধ্যেই, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সফটওয়্যারের ব্যবহার শুরু হয়েছে৷ প্রত্যন্ত গ্রামে থেকে আসা ছাত্ররা এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে বাড়ি বসেই অনলাইন ক্লাস শুরু করেছেন৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ড. প্রদ্যুৎ পাল বলেন, ‘‘আমরা ইউজি এবং পিজি-তে ক্লাস করাচ্ছি৷ সামগ্রিকভাবে, এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে খুশি৷’’ প্রযুৎবাবু বলেন, ‘‘জুম বা অন্যান্য সফটওয়্যারগুলির সমস্যা হল, ডেটা খরচ বেশি, তার উপর বেশি ব্যান্ডউইথ লাগে৷ কিন্তু, এই সফটওয়্যারে অপেক্ষাকৃত কম ডেটা খরচ হয়, কম ব্যান্ডউইথেই কাজ হয়৷ সেই কারণে আমাদের প্রত্যন্ত গ্রামে থাকা ছাত্ররা ক্লাস করতে পারে৷ কোনও অসুবিধা হয় না৷’’

উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন আরও জানান, তিন মাসের জন্য এই সফটওয়ার নেওয়া হয়েছে৷ খরচ একেবারেই বেশি নয়৷ রাজ্য সরকারকেও জানান হয়েছে৷ Creative Group এর পক্ষে আবীর গাঙ্গুলি বলেন, ‘‘একটি লিংকের মাধ্যমে তারা গ্রাহকদের কাছে এই সফটওয়্যার পৌঁছে দেবেন৷ ওই লিংক থেকে Usar Id এবং Password ব্যবহার করে গ্রাহক এটিকে কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইলে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন৷

যত খুশি সংখ্যক ছাত্র নিয়ে অসংখ্য ক্লাস একসঙ্গে একই সময় চলতে পারে৷ এক্ষেত্রে ছাত্র সংখ্যা বাড়লে বিদ্যালয়গুলির লাভ৷ তাতে খরচ কমবে৷ এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য স্বশরীরে বিদ্যালয়ে পৌঁছে যাওয়ার দরকার নেই৷ অনলাইনে ব্যবস্থা চালু হবে, কোম্পানি অনলাইনেই পেমেন্ট নিয়ে নেবে৷’’ আবীরবাবু আরও জানান, এই ক্লাস রুমের ভিডিও ছাত্ররা ডাউনলোড করতে পারবে৷ শিক্ষকরা পিডিএফে নোট পাঠাতে পারবে৷ তাছাড়া স্টুডিও মোড করা যায়৷ YouTube -এর মত ভিডিও রেকর্ড করে লিংক ও দিয়ে দেওয়া যাবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *