নয়াদিল্লি: নেট দুনিয়ায় পড়ুয়াদের সাইবার সেফটি নিয়ে উদ্বিগ্ন সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)৷ পড়ুয়ারা যাতে ‘রিভেঞ্জ পর্নোগ্রাফি’-র দিকে না ঝোঁকে, সেই বিষয়ে সতর্ক করল বোর্ড৷ তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে বোর্ড চায়, তারা যেন সমস্যায় পড়লে সবার আগে অভিভাবকদের সে কথা জানায়, অনলাইনে যেন তাদের বন্ধুত্বের নির্দিষ্ট গণ্ডি থাকে এবং তাদের মধ্যে যেন শ্রদ্ধাবোধ জন্মায়, এই বিষয়গুলি শিখুক ছাত্রছাত্রীরা৷
করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে বন্ধ রয়েছে স্কুল৷ পঠনপাঠন হয়ে উঠেছে সম্পূর্ণ অনলাইন কেন্দ্রিক৷ ফলে আরও বেশি ভাবে ডিজিটাল দুনিয়ায় অভ্যস্ত হয়ে উঠছে পড়ুয়ারা৷ সম্প্রতি ইনস্টাগ্রাম গ্রুপ ‘বয়েজ লকার রুম’–এর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ দিল্লির বিভিন্ন স্কুলের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রদের অশ্লীল আলোচনার ফাঁস হতেই, সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে৷ এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি উদ্বিগ্ন সিবিএসই৷
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কুলগুলিকে একটি সাইবার সেফটি হ্যান্ডবুক দিয়েছে সিবিএসই৷ ওই হ্যান্ডবুকে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের জন্য সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন ছকে দেওয়া হয়েছে৷ এই সংবেদনশীল ইস্যুতে তাঁদের কী করা উচিত, আর কী করা উচিত নয়, সে বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়েছে ওই বইয়ে৷
বোর্ডের এক সিনিয়র আধিকারিক বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের অবশ্যই তাদের অনলাইনে বন্ধুত্বের সীমা নির্ধারণ করতে শিখতে হবে৷ সেইসঙ্গে ইন্টারনেটে বাস্তব জীবনের বন্ধুদের সঙ্গে কতখানি যোগাযোগ রাখবে সেই বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে৷ তারা বন্ধুদের সঙ্গে যে চ্যাট করছে অথবা কোন ছবি বা ভিডিও শেয়ার করছে, সেই বিষয়েও সাবধান হতে হবে৷ তাদের মনে রাখতে হবে, একবার অনলাইন হওয়ার পর সেগুলি কে দেখবে সেই বিষয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না৷ ফলে যে কোনও পরিস্থিতিতে তাদের আস্থা ভঙ্গ হতে পারে৷ এতে তাদের কোনও মন্তব্য বা ছবির অপব্যবহার হওয়ার ঝুঁকি থাকে এবং মান সম্মানের উপরেও আঘাত আসতে পারে৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কিশোর-কিশোরীদের লিঙ্গ ভেদে সম্পর্কগুলি বুঝতে হবে৷ ছেলেদের অবশ্যই মেয়েদের সঙ্গে সম্মান নিয়ে কথা বলতে শিখতে হবে৷ প্রকৃত মানুষ হিসাবে তাদের ইচ্ছা বা আকাঙ্খাকে সম্মান দিতে হবে৷’’ এখনও পর্যন্ত ভারতে ডিজিটাল সম্মতির কোনও ন্যূনতম বয়স নেই৷ অনেক সময় শারীরিক বা যৌন অভিজ্ঞতার কথা সরাসরি করাও সঙ্গে শেয়ার করতে পারে না ছেলেমেয়েরা৷ স্বভাবতই অনলাইনেও অচেনা কোনও মানুষের সঙ্গে সেই কথা শেয়ার করতে চাইবে না তারা৷ কিন্তু অনেক সময়ই সাইবার গ্রুমাররা ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে বন্ধুত্বের ফাঁজ পেতে শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করতে পারে৷ এই বিষয়েও তাদের সতর্ক করেছে বোর্ড৷