কলকাতা: করোনা আবহে বদলে গিয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা৷ থমকে গিয়েছে পঠন-পাঠন৷ বন্ধ স্কুল কলেজ৷ কিন্তু তার মধ্যেও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা নিয়ে নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়৷পড়ুয়াদের এবার সরাসরি বই-খাতা খুলে অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ফাইনাল বর্ষের পরীক্ষায় বই খুলে দেওয়া যাবে পরীক্ষা৷ আগামী ১-১৮ অক্টোবরের মধ্যে বাড়ি থেকে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা কার্যকর করছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেইল মারফত পড়ুয়াদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷
প্রশ্নপত্র পাঠানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ বাড়িতে বসে বই দেখে পরীক্ষা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেই উত্তপত্র জমা দিতে হবে বলেও জানানো হয়েছে৷ বই দেখে উত্তরপত্র লেখার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষকরাই ওই খাতা দেখবেন বলেও জানানো হয়৷ এক কথায় নামে পরীক্ষা! বাকিটা ঢালাও নম্বর৷ তাও আবার চূড়ান্ত বর্ষে৷
আজ সাংবাদিক বৈঠক করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে কলেজগুলি আমাদের রয়েছে, সেখানে যে সমস্ত পরীক্ষাগুলি হয়নি, সেই পরীক্ষাগুলি হবে অনলাইনে৷ ইমেইলের মাধ্যমে, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আমরা প্রশ্নপত্র পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেব৷ অনলাইনে উত্তরপত্র জমা দিয়ে দেবে পড়ুয়ারা৷ যদি কোনও ছাত্রছাত্রী তার না পারে, তাহলে সে হার্ডকপি লিখে কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে জমা দিতে পারবে৷ ১ থেকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে সমস্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে৷ ৩১ তারিখের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে৷’’
কিন্তু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ফাইনাল পরীক্ষায় এহেন পরীক্ষা ব্যবস্থার মানে কী? পরীক্ষার্থীদের ডিগ্রি দেওয়ার নামে ঢালাও নম্বর দেওয়ার বন্দোবস্ত আদৌ পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে খাতা-বই খুলে পরীক্ষার বিধি আদৌ কতটা কার্যকর? পরীক্ষা না প্রহসন? যখন চারকির বাজারে এত প্রতিযোগিতা, সেখানে চাকরি পেতে যখন প্রার্থীদের জুতোর সুখতলা উঠে যাওয়ার অবস্থা, সেখানে ঢালাও নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা আদতে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে পড়ুয়াদের? নাকি, ঠিকঠাক পরীক্ষা না নিয়ে খরচ বাঁচানোর চেষ্টা? প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ৷